Logo
আজঃ বৃহস্পতিবার ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
শিরোনাম

৩১ রানের ইনিংসে ৩ মাইলফলকে বাবর আজম

প্রকাশিত:শনিবার ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ জানুয়ারী ২০২৫ | ১২৬জন দেখেছেন

Image

খেলা ডেস্ক: সেঞ্চুরিয়নে গতকাল রাতে পাকিস্তানকে দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে হারিয়ে টি–টোয়েন্টি সিরিজ ২–০ ব্যবধানে নিজেদের করে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। পাকিস্তানের ২০৬ রান তাড়া করতে নেমে ৩ বল হাতে রেখে জিতেছে হাইনরিখ ক্লাসেনের দল। এ ম্যাচে ২০ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেলে বেশ কিছু রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন পাকিস্তানি তারকা বাবর আজম।

ভারত–পাকিস্তান সমঝোতা, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হাইব্রিড মডেলেই

ম্যাচটি খেলতে নামার আগে তিন সংস্করণ মিলিয়ে বাবরের মোট রান ছিল ১৩,৯৯৮। চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে মোহাম্মদ রিজওয়ান আউট হওয়ার পর ক্রিজে এসে প্রথম বলেই চার মেরে পঞ্চম পাকিস্তানি হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৪ হাজার রানের মাইলফলকের দেখা পান বাবর।


ইনজামাম–উল–হক, ইউনিস খান, মোহাম্মদ ইউসুফ ও জাভেদ মিঁয়াদাদ এর আগে মাইলফলকটি টপকেছেন। ৩৩৮ ইনিংসে বাবরের রান ১৪,০২৯। ৫৫১ ইনিংসে ২০,৫৮০ রান নিয়ে পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রানসংখ্যায় সবার ওপরে ইনজামাম। ইউনিস ৪৯১ ইনিংসে ১৭,৭৯০ রান নিয়ে দ্বিতীয়। ৪৩২ ইনিংসে ১৭,৩০০ রান নিয়ে তৃতীয় ইউসুফ এবং চতুর্থ মিঁয়াদাদের সংগ্রহ ৪০৭ ইনিংসে ১৬,২১৩ রান।


সেঞ্চুরি করে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেন রিজা হেনড্রিকস। সেঞ্চুরির পর তাঁর উদ্‌যাপন এএফপি

এই ইনিংস দিয়ে স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতেও একটি রেকর্ড গড়েছেন বাবর। এই সংস্করণে দ্রুততম ১১ হাজার রানের রেকর্ড এখন তাঁর। ২৯৮ ইনিংসে বাবরের রানসংখ্যা এখন ১১,০২০। 


এই পথে বাবর ভেঙেছেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ক্রিস গেইলের রেকর্ড। মাইলফলকটিতে পৌঁছাতে গেইলের লেগেছিল ৩১৪ ইনিংস। অর্থাৎ প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ৩০০-এর কম ইনিংস খেলে ১১ হাজার রানের দেখাও পেলেন বাবর।


ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম এই সংস্করণে দ্রুততম ৭, ৯ ও ১০ হাজার রানের রেকর্ডও তাঁর।


তবে স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতে বাবরের চেয়ে বেশি রান করা পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান কিন্তু আছেন। তিনি আবার অলরাউন্ডার। ঠিকই ধরেছেন। ৪২ বছর বয়সী শোয়েব মালিক। বাবরের জন্মের (১৫ অক্টোবর, ১৯৯৪) ঠিক ৫ বছর পরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত (১৫ অক্টোবর, ১৯৯৯) শোয়েব এই সংস্করণে ৫০৫ ইনিংসে ১৩,৪১৫ রান করেছেন। ক্রিস গেইলের পরই (৪৫৫ ইনিংসে ১৪,৫৬২) এ সংস্করণে রানে দ্বিতীয় শোয়েব।


শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৪ হাজার এবং স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতে ১১ হাজার রানই নয়, বাবর কাল আরও একটি হাজারের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। ৩১ রানের ইনিংসের পথে ছুঁয়েছেন পেশাদার ক্রিকেটে ২৬ হাজার রানের ঘর। বাবরের তিন মাইলফলকের ম্যাচে পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বড় ইনিংসটি খেলেছেন অবশ্য সাইম আইয়ুব। 


৫ ছক্কা ও ১১ চারে ৫৭ বলে ৯৮ রানে অপরাজিত ছিলেন এই ওপেনার। শেষ দিকে ইরফান খানের ১৬ বলে ৩০ রান পাকিস্তানকে দুই শ পার হওয়ার রাস্তা তৈরি করে দেয়। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা ভেবে রেখেছিলেন অন্য কিছু। বিশেষ করে ওপেনার রিজা হেনড্রিকস।


১০ ছক্কা ও ৭ চারে ৬৩ বলে ১১৭ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে প্রথম টি–টোয়েন্টি সেঞ্চুরিও তুলে নেন এই ডানহাতি। ৩৮ বলে ৬৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে মাঠে থেকে জয় নিশ্চিত করেন রাসি ফন ডার ডুসেন। জোহানেসবার্গে আজ রাত ১০টায় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ।


সংক্ষিপ্ত স্কোর:


পাকিস্তান: ২০ ওভারে ২০৬/৫ (সাইম ৯৮*, বাবর ৩১, ইরফান ৩০, রিজওয়ান ১১, আব্বাস ১১*; দাইয়ান ২/২১, বার্টম্যান ২/৫১, লিন্ডা ১/২৮)।


দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৯.৩ ওভারে ২১০/৩ (হেনড্রিকস ১১৭, ডুসেন ৬৬*, ব্রিটৎজকে ১২, ক্লাসেন ৮*; জাহানদাদ ২/৪০, আব্বাস ১/৪৬, আবরার ০/২৯, হারিস ০/৫৭)।


ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৭ উইকেটে জয়ী।


সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা ২–০ তে এগিয়ে।


ম্যাচসেরা: রিজা হেনড্রিকস (দক্ষিণ আফ্রিকা)।



আরও খবর



দারুল আরকাম ছিল মুসলমানদের আশ্রয়স্থল

প্রকাশিত:সোমবার ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ৫৪জন দেখেছেন

Image

ধর্ম ডেস্ক: দারুল আরকাম মানে আরকামের ঘর। ঘরটির অবস্থান ছিল মক্কার সাফা পাহাড়ের কাছে। সাফা ও মারওয়ার মাঝখানে সাঈ করার সময় বাড়িটির দরজার সামনে দিয়ে যেতে হতো। আব্বাসি খলিফা আবু জাফর আল মনসুরের সময় পর্যন্ত বাড়িটি অবিকৃত ছিল। এর পর আল-আরকামের এক প্রৌত্র আবদুল্লাহ ইবনে উসমান কারাগার থেকে মুক্তি পেতে তাঁর ভাগের অংশ খলিফা মনসুরের কাছে ১৭ হাজার দিনারে বিক্রি করে দেন। খলিফা মনসুরের পর খলিফা মাহদী এ বাড়ি দান করেন। তিনি বাড়িটির পুরোনো কাঠামো সংস্কার করেন। এভাবে বেশ কিছু হাত বদল হয়ে যুগে যুগে বাড়িটির পরিবর্তন সাধিত হতে থাকে। ধীরে ধীরে এক সময় বাড়িটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।


ইসলামের সংকটপর্বে দারুল আরকাম ছিল রাসুল (সা.) ও মুসলমানদের আশ্রয়স্থল। সেটি হয়ে উঠেছিল ওহি নাজিলেরও অন্যতম স্থান। বাসাটির মালিক ছিলেন আল-আরকাম ইবনে আবিল আরকাম (রা.)।


দারুল আরকাম বা আরকামের বাড়ির কথা উল্লেখ না করে ইসলামের প্রথম পর্যায়ের ইতিহাস আলোচনা করা সম্ভব নয়। ইসলামের প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এ বাড়ির ভূমিকা অনন্য। নবুয়তের প্রথম দিকে ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষা ও ইবাদতের নিয়মনীতি এখানে শেখানো হতো। সে সময় অল্প যে কজন ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, তাঁরা এ বাসায় রাসুল (সা.)–এর সঙ্গে মিলিত হতেন। উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) এ বাড়িতে ইসলামের ঘোষণা দেন।


আল-আকরামের জন্ম ৫৯৭ খ্রিষ্টাব্দে। জাহেলি যুগের আরবে তিনি বিশেষ মর্যাদা ও ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। ইসলামপূর্ব যুগে রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর নেতৃত্বে মক্কায় ‘হিলফুল ফুজুল’ নামে যে কল্যাণ সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, আরকাম ছিলেন তাঁর অন্যতম সদস্য। তাঁর দাদা ছিলেন মক্কার একজন নেতা।


আরকাম (রা.) ১১–১২ জনের পরই ইসলাম গ্রহণ করেন। মুসলিমদের অবস্থা সে সময় সংকটজনক। মক্কার অবিশ্বাসীরা চাচ্ছিল, শক্তি অর্জনের আগেই ইসলামের আন্দোলনটিকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে।


আরকাম (রা.)–এর ইসলাম গ্রহণের পর তাঁর বাড়িটি মুসলিমদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণকেন্দ্রে পরিণত হয়। রাসুল (সা.) এখানে ইসলামে আসা নতুন মুসলমানদের সঙ্গে একত্র হয়ে বৈঠক করতেন। রাসুল (সা.) ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে এখান থেকে ইসলামের দাওয়াত দিতেন।


উমর (রা.) ইসলাম গ্রহণের পর ঘর থেকে বেরিয়ে প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত ও শিক্ষাদান শুরু হয়। মুসলমানরা আরকামের বাসা থেকে বের হয়ে মসজিদে হারামে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়েন। আবু বকর (রা.) কাবা প্রাঙ্গণে উপস্থিত কুরাইশদের সম্বোধন করে ইসলামের দাওয়াত তুলে ধরতেই আবু বকরের ওপর তারা হামলা করেছিল। এভাবে মক্কায় প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার সূচনা।


নবুয়তের ১৩তম বছরে মক্কার অন্য মুসলমানদের সঙ্গে আল-আরকাম (রা.) মদিনায় হিজরত করেন। এর পর মদিনায় স্থায়ীভাবে থাকার সময় মক্কার ঐতিহাসিক এই বাড়িটি সন্তানদের জন্য ওয়াকফ করে যান।


আল-আরকাম (রা.) বদর যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। এ যুদ্ধের জন্য রাসুল (সা.) তাঁকে ‘আল-মারজুবান’ নামের একটি তলোয়ার দিয়েছিলেন। সততা ছিল আরকাম (রা.)–এর চরিত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। রাতের ইবাদতের প্রতি ছিল তাঁর প্রবল আকর্ষণ।


৮৩ বছর বয়সে তিনি মদিনায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর অসিয়ত অনুযায়ী সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) তাঁর জানাজা পড়ান। মদিনার জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।


আরও খবর

ডালিমসহ জান্নাতে পাওয়া যাবে যেসব ফল

শনিবার ১১ জানুয়ারী ২০২৫

ভূমিকম্প নিয়ে কোরআন-হাদিসে কী বলা হয়েছে?

বৃহস্পতিবার ০৯ জানুয়ারী ২০২৫




বাস্তব জীবনেও ভালো রেসপন্স পাচ্ছি

প্রকাশিত:শনিবার ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ৬৮জন দেখেছেন

Image

বিনোদন ডেস্ক: নারীপ্রধান গল্পে অভিনয়ে ফের সাড়া ফেললেন সময়ের আলোচিত অভিনেত্রী অলংকার চৌধুরী। নিজেকে সবসময় ভাঙতে পছন্দ করেন তিনি। তেমনি একটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্র পেয়ে যেন নিজেকে উজাড় করে দিলেন। ‘কোহিনুর চেয়ারম্যান’ নামে নাটকটি সম্প্রতি ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে। যার নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মিষ্টি হাসির অলংকার। নাটকটি নিয়ে এ অভিনেত্রী কালবেলাকে বলেন, ‘এ নাটকের অভিনয়ের জন্য আমাকে বেশ প্রস্তুতি নিতে হয়েছে।


কারণ চরিত্রের মানুষটি একদমই আমি না। শক্তিশালী এক নারী চরিত্র যেটিতে দর্শক আমাকে দেখছেন। যদিও নারীকেন্দ্রিক কাজ এটি আমার প্রথম নয়। গত এক বছর ধরেই নারীপ্রধান চরিত্রে কাজ করছি।’


অলংকার বলেন, ‘কোহিনুর চেয়ারম্যান নাটকটিতে সমাজের দুর্নীতি, অপরাজনীতির শিকড় ভেঙে দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। গৎবাঁধা বিনোদনধর্মী নাটকের চেয়ে এটি আলাদা। আমাদের সমাজের নানা সমস্যা উঠে এসেছে এ নাটকে। আমি সোশ্যাল মাধ্যমের পাশাপাশি বাস্তব জীবনেও ভালো রেসপন্স পাচ্ছি কাজটির জন্য।’


কাজটির অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা টানা চার দিন নাটকটির শুটিং করেছিলাম। খুলনায় শুটিং হয়েছে। শুটিংয়ের আগে থেকেই স্ক্রিপ্ট নিয়ে অনেক ভেবেছি। নিজেকে চরিত্রটির জন্য তৈরি করেছি। ঘটনার পরিক্রমায় একজন নারীর রাজনীতির ময়দানে নেত্রী হয়ে ওঠার বিষয়টি নারীদের অনুপ্রেরণা জোগাবে বলে আমার বিশ্বাস।’


এদিকে নতুন বছরে অলংকার অভিনীত ‘মুক্তির ছোটগল্প’ নামে একটি সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে আসার কথা রয়েছে। এটি সরকারি অনুদানে নির্মিত হয়েছে। ২০২৫ সালের পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘এমন কিছু কাজ করতে চাই যেন বিদেশেও আমার দেশের নাম উজ্জ্বল করে। আমি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজের কাজ দেখতে চাই। একজন অভিনেত্রী হিসেবে এটাই আমার স্বপ্ন। আর হ্যাঁ, একটা ধামাকা মিউজিক ভিডিও আসছে।সেটি নিয়ে আগেই কিছু বলতে চাইছি না।

এখন রিহার্সাল করতে যাচ্ছি। কাজটি শেষ হলেই জানাব। নতুন বছরেই এ কাজটি দর্শকরা দেখতে পাবেন।’


আরও খবর

কখনও ভাবিনি আমি বাঁচব : প্রীতি জিনতা

রবিবার ১২ জানুয়ারী ২০২৫




তারেক রহমানের চার মামলা বাতিলের রায় বহাল

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ৪৮জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিনিধি: চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চার মামলা বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রবিবার এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে দেন।
 
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।

২০০৭ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রাজধানীতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়। ২০০৭ সালে মামলা করা হলেও মামলার অপরাধ (ঘটনা) দেখানো হয়েছে ২০০৩, ২০০৪ ও ২০০৫ সালের।

২০০৭ সালে গুলশান থানায় তিনটি ও ধানমন্ডি থানায় করা একটি মামলাসহ ওই চার মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে তারেক রহমান সেসময় হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন।  

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল অ্যাবসলিউট (চূড়ান্ত) ঘোষণা করে ২৩ অক্টোবর রায় দেন হাইকোর্ট। পরে এ চার মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

হাইকোর্টের রায়ের দিন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছিলেন, এফআইআরে তারেক রহমানের নামই নেই। বারবার তাকে রিমান্ডে নিয়েছে, টর্চার করেছে। অমানবিক নির্যাতন করেছে। হাইকোর্ট রুল মঞ্জুর করেছেন। মানে এ চারটি মামলার কার্যক্রম বাতিল করেছেন।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ২০০৪ সালের ঘটনায় ২০০৭ সালে এসব মামলা করেছে। ওয়ান ইলেভেনের সরকারের সময় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা করা হয়েছিল।  


আরও খবর

স্বস্তি ও উদ্বেগ দুটোই বিএনপিতে

শনিবার ১১ জানুয়ারী ২০২৫




যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধের আইন স্থগিত রাখতে সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ ট্রাম্পের

প্রকাশিত:শনিবার ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ৭৭জন দেখেছেন

Image

অনলাইন ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটিতে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক নিষিদ্ধ করাসংক্রান্ত একটি আইন স্থগিত রাখতে সুপ্রিম কোর্টের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।


এ আইনের অধীন আগামী ১৯ জানুয়ারির মধ্যে চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন টিকটককে যুক্তরাষ্ট্রে কোনো মার্কিন কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিতে হবে, নইলে দেশটিতে অ্যাপটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। এখন আইনটি স্থগিত রাখার অনুরোধ জানানোর পেছনে ট্রাম্পের যুক্তি, ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এ বিষয়ে একটা ‘রাজনৈতিক সমাধানে’ পৌঁছাতে তাঁকে সময় দেওয়া উচিত।


ট্রাম্প ওই অনুরোধ জানানোর পর এ বিষয়ে ১০ জানুয়ারি সর্বোচ্চ আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস গত এপ্রিলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকটক বিক্রি, নইলে বন্ধ করে দেওয়াবিষয়ক বিলের পক্ষে ভোট দেয়। পরে দেশটির একটি আপিল আদালত একই আদেশ দেন।


টিকটকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আইনটি তুলে নিতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। তবে আদালত যদি আগামী মাসের শুনানিতে তাদের পক্ষে আদেশ না দেন, অ্যাপটি ১৯ জানুয়ারি থেকে, অর্থাৎ ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার এক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে আক্ষরিক অর্থেই নিষিদ্ধ হয়ে যাবে।


এর আগে গত ১১ মার্চ ট্রাম্প (সে সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী) বলেছিলেন, টিকটক জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তবে তিনি একই সঙ্গে বলেন, এ অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে বাচ্চাদের কেউ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর এতে শুধু মেটার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের অবস্থানই শক্তিশালী হবে। ট্রাম্পের শেষ কথাটির সমালোচনা করেছিলেন রিপাবলিকানরা।


আরও আগে ২০২০ সালে ট্রাম্প টিকটক ও চীনা মালিকানাধীন আরেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাট নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে আদালতের বাধায় তিনি আর সফল হননি। টিকটক নিয়ে ট্রাম্পের বর্তমান অবস্থান তাঁর ওই অবস্থানের একেবারে উল্টো।


যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১৭ কোটির বেশি ব্যবহারকারী রয়েছেন। ফলে এটি সে দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল মাধ্যম হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে।


টিকটকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আইনটি তুলে নিতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। তবে আদালত যদি আগামী মাসের শুনানিতে তাদের পক্ষে আদেশ না দেন, অ্যাপটি ১৯ জানুয়ারি থেকে, অর্থাৎ ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার এক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে আক্ষরিক অর্থেই নিষিদ্ধ হয়ে যাবে।


ট্রাম্পের প্রধান আইনজীবী জন সাউয়ার বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ বিতর্কের (টিকটক নিষিদ্ধ করা) মেরিট নিয়ে কোনো অবস্থান নিচ্ছেন না। পরিবর্তে টিকটক নিষিদ্ধে ১৯ জানুয়ারি ২০২৫–এর যে সময়সীমা রয়েছে, সেটি স্থগিত রাখার বিষয় আদালতকে বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন। এটি বিবেচনা করা হলে ট্রাম্পের ভবিষ্যৎ প্রশাসন বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে সমাধানের সুযোগ পাবে।’


এর আগে গত ডিসেম্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টিকটকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শোউ ঝি সাক্ষাৎ করেন। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, টিকটকের বিষয়ে তাঁর একধরনের আকর্ষণ রয়েছে এবং তিনি চান অ্যাপটি অন্তত আরও কিছুদিন যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয়া থাকুক। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এ অ্যাপে তিনি কোটি কোটি ভিউ পেয়েছেন।


প্রসঙ্গত, টিকটকে ছোট ভিডিও দেওয়া হয়। তবে অনেক সময় অবান্তর ভিডিও-ও পোস্ট করা হয়ে থাকে। আর সেগুলো তরুণ জনগোষ্ঠী বেশ পছন্দ করে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে বিজ্ঞাপন প্রকাশকারীরা। তাদের কাছ থেকে অনেক বিজ্ঞাপনদাতা সরে গেছে এবং টিকটকে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে।


মার্কিন কংগ্রেসের ভয়, টিকটকের চীনা মালিকেরা যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য এ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে কাজে লাগাচ্ছে। যদিও চীনা মালিকেরা এ আশঙ্কা নাকচ করে দিয়েছেন।


টিকটকে পুরুষদের লাইফস্টাইল ভিডিও তৈরি করেন ক্রিস বাকেট। তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ১৩ লাখ। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, এ প্ল্যাটফর্ম টিকে থাকবে বলে তিনি মনে করেন না। তাঁর কথায়, ‘আমি মনে করি না যে যুক্তরাষ্ট্রে এ অ্যাপের আর আয়ু আছে।’ তিনি তাঁর ফলোয়ারদের বলেছেন যে তাঁরা যেন তাঁকে ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, এক্স ও থ্রেডসে ফলো করেন।


আরও খবর



ফৌজদারি মামলা তদন্তের জন্য পুলিশের বাইরে সংস্থার প্রস্তাব

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ৩৬জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিনিধি: ফৌজদারি অপরাধের মামলা তদন্তের জন্য আলাদা সংস্থা গঠন করা প্রয়োজন বলে মনে করে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। সংস্থাটি হবে দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য, যাতে প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারে। একই সঙ্গে বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতে একটি স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছে কমিশন।


কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে এসব প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটি সম্প্রতি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।


বর্তমানে ফৌজদারি অপরাধের তদন্ত করে পুলিশ। থানা-পুলিশের পাশাপাশি অপরাধ তদন্তে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রয়েছে। এর মধ্যে পিবিআই যাত্রা শুরু করে ২০১২ সালে। তবে এসব ইউনিট পুলিশের অধীনে পরিচালিত হয়। নিয়োগ হয় পুলিশ থেকে বদলির মাধ্যমে।



বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন যে তদন্ত সংস্থার কথা বলছে, তার কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রাথমিক প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, সংস্থাটির জনবল পুলিশ বাহিনী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হবে। তাদের নিয়োগ, চাকরির শর্ত, বাজেট, অবকাঠামো ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি একটি স্বতন্ত্র সংগঠন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোভুক্ত হবে। সাধারণভাবে প্রস্তাবিত সংস্থা কাজ শুরু করবে মামলা দায়েরের পর। এই সংস্থার তদন্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট অ্যাটর্নি বা প্রসিকিউটরের তদারকিতে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। 


বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য আইনজীবী তানিম হোসেইন শাওন প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক প্রতিবেদনে সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম, ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় যথাযথ ও প্রভাবমুক্ত তদন্ত নিশ্চিতে স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা গঠন; স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা এবং স্বল্প ব্যয়ে ও স্বল্প সময়ে কার্যকর বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ তুলে ধরা হয়েছে। এগুলোর পাশাপাশি বিচার বিভাগের আর্থিক স্বাধীনতা, পর্যাপ্ত বাজেট নিশ্চিত করাসহ বেশ কয়েকটি বিষয় কমিশনের বিবেচনায় রয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসবের প্রতিফলন থাকবে।



বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের সুপারিশ পেতে অন্তর্বর্তী সরকার ১১টি কমিশন গঠন করেছে, যার একটি বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমানকে প্রধান করে আট সদস্যের এই কমিশন গঠন করা হয় গত ৩ অক্টোবর। ৯০ দিনের মধ্যে কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা। সময়সীমা গতকাল শুক্রবার শেষ হয়। তবে সময়সীমা ইতিমধ্যে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। কমিশন এর আগে একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।


প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় তদন্ত একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তদন্ত কর্মকর্তা সৎ, সাহসী, দক্ষ ও পেশাদার না হলে তদন্ত প্রতিবেদনে নানা রকম দুর্বলতা থেকে যায়। অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবসহ নানা কারণে যথাযথভাবে প্রকৃত তথ্য প্রতিফলিত হয় না। দ্রুত ও মানসম্পন্ন তদন্তের ওপর মামলার ফলাফল অনেকাংশে নির্ভরশীল।


কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মুহাম্মদ নুরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গোটা পৃথিবীতে পুলিশ ফৌজদারি মামলার তদন্ত করে। তবে ফ্রান্সে ম্যাজিস্ট্রেটদের তদন্তের উদাহরণ আছে। আমরা তদন্তের জন্য সিআইডি, পিবিআই ও দুদকের (দুর্নীতি দমন কমিশন) মতো সংস্থা করেছি। এরপরও কেন নতুন তদন্ত সংস্থার প্রয়োজন হবে, সেটি পরিষ্কার নয়।’ তিনি বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তার তদন্তে আইজিপিরও কিছু বলার ক্ষমতা নেই। এরপরও তো প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেছে। এগুলো হয়েছে মূলত রাজনৈতিক কারণে। নতুন সংস্থা হলে যে সেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হবে না, সেই নিশ্চয়তা কে দেবে।


আইনজীবীরা বলছেন, দেশে সার্বিকভাবে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তদের দোষী প্রমাণিত হওয়ার হার কম-বেশি ২০ শতাংশ। ৮০ শতাংশই খালাস পেয়ে যায়। এর কারণ, তদন্তে ঘাটতি। থানা-পুলিশের একেকজন তদন্ত কর্মকর্তার কাছে অনেক মামলা থাকে। তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নানা কাজ থাকে। ফলে সব মামলার তদন্তে প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারেন না তদন্ত কর্মকর্তা। অনেকের বিরুদ্ধে প্রভাবশালীর চাপে তদন্ত ভিন্ন খাতে নেওয়া এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে।


দুর্নীতি প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করা সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গত মাসে ‘সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ ২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনে জানায়, দেশে সর্বোচ্চ ঘুষ গ্রহণকারী পাঁচটি খাত হলো পাসপোর্ট, বিআরটিএ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, বিচারিক সেবা ও ভূমি খাত।



সংস্কার কমিশন বলেছে, একটি বড় সমস্যা হলো মিথ্যা মামলা। অনেক ক্ষেত্রে দোষী ব্যক্তিদের সঙ্গে নির্দোষ ব্যক্তিদেরও মামলায় যুক্ত করা হয়। আবার প্রকৃত ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করা হয় বা মূল ঘটনাকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধামাচাপা দেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে তদন্ত সুষ্ঠু না হলে নিরপরাধ ব্যক্তির হয়রানির আশঙ্কা থাকে বা প্রকৃত অপরাধী ছাড়া পেয়ে যায়। বিরোধী পক্ষকে হয়রানির উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা দায়ের ও পুলিশকে ব্যবহারের মাধ্যমে হেনস্তার ঘটনা অহরহ ঘটে থাকে।


সংস্কার কমিশন বলছে, পুলিশের কিছু সদস্যের দুর্নীতি, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও অসৎ উদ্দেশ্যে পুলিশকে যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে পুলিশের ব্যাপারে একধরনের ভীতি কাজ করে। এ ছাড়া তদন্তকাজ পরিচালনায় পুলিশের কোনো একক ইউনিট নেই; বরং একাধিক বিভাগকে একই ধরনের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুলিশের তদন্ত ব্যবস্থা যথেষ্ট সুসংগঠিত ও সুদক্ষ নয়। সমন্বয়ের অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই যথাযথ সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়াই আদালতে মামলার বিচার শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায়।



প্রাথমিক প্রতিবেদনে অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনের প্রস্তাবের পক্ষে তথ্য ও যুক্তি তুলে ধরেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর ভাষ্য, এ পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেলসহ সর্বস্তরের আইন কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়েছেন মূলত অস্থায়ীভাবে এবং রাজনৈতিক বিবেচনায়। আইন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন বিষয়ে জবাবদিহির কোনো আইনি কাঠামো নেই। যোগ্যতা বা দক্ষতা বা সততা নয়, মূলত আইন কর্মকর্তাদের নিয়োগকে বিবেচনা করা হয় রাজনৈতিক আনুগত্যের পুরস্কার হিসেবে।


এ ছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস ছাড়া জেলা পর্যায়ে কোনো আইন কর্মকর্তার জন্য পৃথক অবকাঠামো, সহায়ক জনবল, বাজেট বা আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ফৌজদারি মামলার তদন্তকারী ব্যক্তি অথবা সংস্থার সঙ্গে আইন কর্মকর্তাদের মতামত গ্রহণ বা গুরুত্ব দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও নেই। জেলা পর্যায়ের আইন কর্মকর্তার জন্য নির্ধারিত পারিশ্রমিক অতি নগণ্য। তাঁদের দায়িত্ব পালনের মান মোটেও সন্তোষজনক নয়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে একটি স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন বলে কমিশন মনে করে।


প্রাথমিক প্রতিবেদনে প্রস্তাবিত অ্যাটর্নি সার্ভিসের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। এর ভাষ্য, অ্যাটর্নি সার্ভিস হবে একটি স্থায়ী সরকারি চাকরি। সার্ভিসের সুনির্দিষ্ট কাঠামো, নিয়োগপদ্ধতি, পদোন্নতি, বদলি, শৃঙ্খলা, বেতনকাঠামোসহ আর্থিক সুবিধাদি এবং আনুষঙ্গিক বিষয়ে যথাযথ বিধানসংবলিত আইন থাকবে। পর্যাপ্ত অবকাঠামো, বাজেট বরাদ্দ ও সহায়ক জনবলের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রস্তাবিত সার্ভিসের দুটি ইউনিট থাকবে— (ক) অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং অ্যাডিশনাল অ্যাটর্নি জেনারেল সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্ট ইউনিট এবং (খ) অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি, ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি, অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট এবং ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি সমন্বয়ে গঠিত জেলা ইউনিট।


ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা এবং স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠন প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক। সংস্কার কমিশনের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যতিক্রম, যেখানে ল ক্যাডার সার্ভিস নেই। ক্ষমতাসীন দল বদল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল থেকে শুরু করে আইন কর্মকর্তা ও পিপি-এপিপি পদে রদবদল হয়ে যায়। নতুন ক্ষমতাসীন দলের অনুসারীরা ওই সব পদে নিয়োগ পান। এতে দক্ষতা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ঘাটতি দেখা যায়।


শাহদীন মালিক বলেন, পুলিশকে বহু ধরনের কাজ করতে হয়। যদি আলাদা করে একদল শুধু তদন্তের জন্য নিয়োজিত থাকে, তাহলে তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়বে। তদন্ত সঠিক ও যথার্থ হবে।


আরও খবর