সরকার সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে নতুন ‘এক দেশ, এক রেট’ নীতি ঘোষণা করেছে, যা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য এক বিরাট সান্ত্বনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ইন্টারনেট সেবাদাতারা (আইএসপি) নির্দিষ্ট গতিতে একই রকম মূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করবেন, যাতে গ্রাহকরা সারাদেশে একই মূল্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পেতে পারেন।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) রোববার (১৮ মে) নতুন ট্যারিফ ঘোষণা করে। নতুন ট্যারিফ অনুযায়ী, পাঁচ মেগাবিট প্রতি সেকেন্ড (৫ এমবিপিএস) গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মাসিক মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে চারশত টাকা, যা আগে ছিল পাঁচশত টাকা। একইভাবে, দশ মেগাবিট প্রতি সেকেন্ডের (১০ এমবিপিএস) ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে সাতশত টাকা এবং বিশ মেগাবিট প্রতি সেকেন্ড (২০ এমবিপিএস) গতির ইন্টারনেটের মূল্য এক হাজার একশত টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে এই দামগুলো যথাক্রমে ছিল পাঁচশত, আটশত ও এক হাজার দুইশত টাকা।
ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি জানায়, নতুন ট্যারিফ কার্যকর হলেও, ইতিমধ্যে কিছু সেবা প্রদানকারী কম দামে ইন্টারনেট সেবা দিয়ে আসছেন। তবে সরকার সব সেবাদাতাদের জন্য এই ট্যারিফ বাধ্যতামূলক করেছে।
নতুন ট্যারিফ আগামী জুলাই মাস থেকে কার্যকর হবে এবং প্রথম ধাপে পাঁচ বছর পর্যন্ত প্রযোজ্য থাকবে। বিটিআরসি জানিয়েছে, পরবর্তীতে বাজারের চাহিদা ও গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনায় এই ট্যারিফ প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করা যেতে পারে।
নির্ধারিত ট্যারিফের শর্তাবলী অনুযায়ী:
১. বিটিআরসির লাইসেন্সধারী সব সরকারি ও বেসরকারি ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এই ট্যারিফ অনুসরণ করতে বাধ্য থাকবেন।
২. গ্রাহক সেবার মান ও পরিষেবার নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করতে ‘কোয়ালিটি অব সার্ভিস অ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স’ এর মানদণ্ড অনুযায়ী গ্রেড এ, বি ও সি নির্ধারণ করা হয়েছে এবং আইএসপি গুলো এই মান বজায় রাখবে।
৩. পাঁচ দিন ধরে অব্যাহতভাবে ইন্টারনেট বন্ধ থাকলে গ্রাহক মাসিক বিলের পঞ্চাশ শতাংশ, দশ দিন হলে পঁচিশ শতাংশ এবং পনেরো দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকলে মাসিক বিল দিতে হবে না।
৪. সরকারের অনুমোদিত সর্বনিম্ন ইন্টারনেট স্পিড হবে ৫ এমবিপিএস এবং সংযোগ রেশিও ১.৮ আনুপাতিক হারে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৫. অনুমোদিত ট্যারিফ কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে এবং ট্যারিফের বাইরে অন্য কোনো সেবা বা মূল্য গ্রহণযোগ্য নয়।
৬. অনুমোদন ছাড়া ট্যারিফের বাইরে সেবা প্রদান করলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই নতুন উদ্যোগ গ্রাহকদের জন্য ইন্টারনেট সেবাকে আরও সাশ্রয়ী করে তুলবে এবং সারাদেশে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।