Logo
আজঃ শুক্রবার ২৮ জুন ২০২৪
শিরোনাম

ধামরাইয়ে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

প্রকাশিত:শনিবার ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৮ জুন ২০২৪ | ১৩৯জন দেখেছেন

Image

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি : ঢাকার ধামরাইয়ে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ফ্রেম হাউস ফুটওয়্যার লিমিটেড নামে একটি জুতা কারখানার শ্রমিকরা।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাই থানা রোড এলাকায় ঢাকাগামী লেনে শ্রমিকরা এ অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কে অন্তত ৩-৪ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।

শ্রমিকরা জানান, প্রতি মাসে ৭,১০০ টাকা বেতন শ্রমিকদের। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এই বেতনে তাদের স্বাভাবিক জীবন পরিচালনা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। শ্রমিকরা সর্বনিম্ন ১২,৫০০ টাকা বেতনের দাবি জানিয়ে আসছেন। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার কথা বললেও তারা দাবি মেনে নেননি। এরই জেরে শনিবার শ্রমিকরা কারখানা সংলগ্ন মহাসড়কে অবরোধ করেন।

সারোয়ার হোসেন নামে এক শ্রমিক বলেন, আমরা ৭,১০০ টাকা করে বেতন পাই। এ নিয়ে মালিকদের কাছে দাবি জানিয়েছি। তারা মানেননি। তাই আন্দোলন করছি।

মোহাম্মদ আলী নামে আরেক শ্রমিক বলেন, হেল্পারদের ১২,৫০০ ও অপারেটরদের ১৫,৫০০ টাকা বেতন দিতে হবে এবং ৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ করতে হবে। এই দাবিতে আমরা কারখানার দুই হাজার শ্রমিক সড়কে নেমে আন্দোলন করছি।

সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম প্রোডাকশন) জামাল বসুনিয়া বলেন, পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির গেজেট হলেও জুতা কারখানা শ্রমিকদের বিষয়ে গেজেট হয়নি। এরপরও শ্রমিকরা দাবি জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ আগামী মাসেই বর্ধিত বেতন দেওয়ার কথা ভাবছে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আনোয়ার হোসেন খান বলেন, পোশাক কারখানায় যে ন্যূনতম বেতন দেওয়া হয়েছে, জুতা কারখানা শ্রমিকরা তা পাননি। তাই একইভাবে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। মালিকপক্ষ বলছে, তাদের বিষয়েতো গেজেট হয়নি। এ নিয়েই মূলত আন্দোলন। সকাল ৯টার দিকে তারা সড়ক অবরোধ করে। তবে প্রায় সাড়ে ১১টার তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে সড়কে যান চলাচল সচল হয়েছে।


আরও খবর



রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তিনজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।

প্রকাশিত:সোমবার ১০ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৮ জুন ২০২৪ | ১৩৫জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে আরও তিনজন। তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (১০ জুন) ভোরে জেলার উখিয়া উপজেলার চার নম্বর (এক্সটেনশন) রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ ব্লকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, ওই ক্যাম্পের এফ ব্লকের জাফর আহম্মদের ছেলে মো. ইলিয়াছ (৩১), মৃত আব্দুর রকিমের ছেলে মো. ইছহাক (৫৪) ও ক্যাম্প-৩-এর ই ব্লকের মো. ইসমাইলের ছেলে ফিরোজ খান (১৮)।

আহতরা হলেন- ক্যাম্পের এফ ব্লকের হাছানের ছেলে আব্দুল হক (৩২), নজির আহাম্মদের ছেলে আব্দুস শুক্কুর (৫৫) ও মৃত ওমর মিয়ার ছেলে আব্দুল মোনাফ (৬০)।

সূত্র জানিয়েছে, ভোর পৌনে চারটার দিকে রোহিঙ্গা মো. ইলিয়াছকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সদস্যরা গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাতে, পায়ে, তলপেটে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়।

এরপরে, ভোর সোয়া চারটার দিকে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আরএসও সমর্থক মো. ইছহাক, ফিরোজ খান, আব্দুল হক, আব্দুস শুক্কুর ও আব্দুল মোনাফকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে।

ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, প্রথমে নিহত রোহিঙ্গা ইলিয়াছ আরসার সোর্স হিসেবে কাজ করতো। আরসা সম্পর্কে তথ্য দিতে রাজি না হওয়ায় আরএসও সদস্যরা প্রথমে তাকে হত্যা করে। পরে ঘটনার খবর পেয়ে আরসা সদস্যরা এসে কয়েকজন আরএসও সমর্থকের ওপর এলোপাতাড়ি হামলা চালায়।

ঘটনার পরে আহত রোহিঙ্গাদের চিকিৎসার জন্য উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. ইছহাক ও ফিরোজ খানকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শামীম হোসেন জানান, নিহতদের মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মো. ইকবাল বলেন, একজন ঘটনাস্থলে মারা যায়। দুজন আহত অবস্থায় হাসপাতালে মারা যায়। বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।


আরও খবর



টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : শ্বাসরুদ্ধকর দুর্দান্ত ম্যাচে শেষ হাসি ভারতের

প্রকাশিত:সোমবার ১০ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৮ জুন ২০২৪ | ১২৮জন দেখেছেন

Image

23 ডেস্ক:

              টার্গেট ছিল মাত্র ১২০ রানের। তাই অনেকে মনে করেছিল অনায়াসেই জয় পাবে পাকিস্তান। তবে ভারতীয় বোলারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে এই অল্প রানের মধ্যে পাকিস্তানকে আটকে দিয়েছে রোহিত শর্মার দল।

দুর্দান্ত এক ম্যাচে পাকিস্তানকে ৬ রানে হারিয়ে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে ভারত।

রোববার (৯ জুন) নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠান পাক অধিনায়ক বাবর আজম। ব্যাট করতে নেমে পাক পেসারদের বোলিং তোপে ১৯ ওভারে মাত্র ১১৯ রানে গুটিয়ে যায় ভারত।

দলের পক্ষে রিশভ পন্থ করেন সর্বোচ্চ ৩১ বলে ৪২ রান। এছাড়া অক্ষর প্যাটেল করেন ১৮ বলে ২০ রান। পাকিস্তানের পক্ষে নাসিম শাহ ও হ্যারিস রউফ নেন ৩টি করে উইকেট। এছাড়া আমির নিয়েছেন ২টি উইকেট।

১২০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরু করেন দুই পাক ওপেনার। বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে দলীয় ২৬ রানে ১০ বলে ১৩ রান করে আউট হন বাবর।

পাক অধিনায়কের বিদায়ের পর ক্রিজে আসা উসমানকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন। ধীরগতিতে রানের চাকা সচল রাখে এই দুই ব্যাটার। তবে দলীয় ৫৭ রানে উসমানকে আউট করে ভারতকে ম্যাচে ফেরার স্বপ্ন দেখান অক্ষর প্যাটেল। ১৫ বলে ১৩ রান করে সাজঘরে ফিরে যান উসমান।

এরপর ২৯ রানের মধ্যে পাকিস্তানের তিন উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফেরে ভারত। ফকর জামান ৮ বলে ১৩, রিজওয়ান ৪৪ বলে ৩১ ও শাদাব খান ৭ বলে ৪ রান করে আউট হন।

এরপর ইফতিখার আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই চলিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ইমাদ ওয়াসিম। তবে দলীয় ১০২ রানে ৯ বলে ৫ রান করে আউট হন ইফতিখার।

শেষ দিকে ভারতীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান করতে সক্ষম হয় পাকিস্তান। ৬ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত। ভারতের পক্ষে জসপ্রীত বুমরাহ ৩টি ও হার্দিক পান্ডিয়া নেন ২টি উইকেট।


আরও খবর



সিরাজগঞ্জে তেলজাতীয় ফসল উৎপাদনকারী কৃষকের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:শনিবার ০১ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৮ জুন ২০২৪ | ১৫৭জন দেখেছেন

Image

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,  খামারবাড়ি, সিরাজগঞ্জ আয়োজিত ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে তেলজাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় তেলজাতীয় ফসল উৎপাদনকারী কৃষকদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

গত ৩০ মে বৃহস্পতিবার সকালে সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালকের কার্যালয়ে জনাব বাবুল কুমার সূত্রধর,  উপপরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি, সিরাজগঞ্জের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মীর মোহাম্মদ মাহবুবর রহমান, জেলা প্রশাসক, সিরাজগঞ্জ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব গণপতি রায়,  অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)  সিরাজগঞ্জ। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মীর মোহাম্মদ মাহবুবর রহমান বলেন, তেলজাতীয় ফসল সরিষা উৎপাদনে বাংলাদেশে সিরাজগঞ্জ প্রথম এজন্য সিরাজগঞ্জের সকল কৃষকদের আন্তর্জাতিক ধন্যবাদ জানাই। সিরাজগঞ্জের উৎপাদিত সরিষা জেলার চাহিদা মিটিয়ে  ১০ ( দশ) হাজার মেট্রিক টন অন্য জেলার চাহিদা পূরণ করতে পারি।

অনুষ্ঠান শেষে জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবর রহমান, তেলজাতীয় ফসল উৎপাদনে বিশেষ অবদান রাখা কৃষকদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন।



আরও খবর



দীপিকা পাডুকোনকে ছেড়েই ক্রুজ পার্টিতে ভালোই ফুর্তিতে ছিলেন রণবীর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৪ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৮ জুন ২০২৪ | ১০৪জন দেখেছেন

Image

অনন্ত আম্বানি-রাধিকা মার্চেন্টের সেকেন্ড প্রি-ওয়েডিং উপলক্ষে ইতালিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন বলিউড অভিনেতা রণবীর সিং।

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী দীপিকা পাডুকোনকে ছেড়েই ক্রুজ পার্টিতে ভালোই ফুর্তিতে ছিলেন রণবীর। তবে ইতালি থেকে ফেরা মাত্রই দীপিকাকে নিয়ে ডিনারে গিয়ে বিদেশে পার্টি করতে যাওয়ার খেসারত দিচ্ছেন অভিনেতা।

এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার রাতে দীপিকাকে নিয়ে ডিনারে গিয়েছিলেন রণবীর সিং। মুম্বাইয়ের একটি রেস্তোরাঁ থেকে বের হওয়ার সময় ফটোসাংবাদিকদের ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন তারা।

এসময় দেখা গেছে, দীপিকার হাত ধরে আগলে রেখেছেন রণবীর সিং। এ সময় অভিনেত্রীর পরনে ছিল স্ট্রাইপড লাল কুর্তা ও পাজামা। রণবীরের পরনে ছিল ছিমছাম টি-শার্ট। দুজনের চোখেই চশমা। এ সময় দীপিকার বেবিবাম্পটাও ঈষৎ দৃশ্যমান হয়েছিল

 

এদিন রণবীরের মা অঞ্জু ভাবনানি ও বাবা জগজিৎ সিং এবং শাশুরিসহ পরিবারের সবাইকে নিয়েই রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন রণবীর।

কয়েকদিন আগে বেবি বাম্প নিয়েই ‘সিংঘম’ সিনেমায় শ্যুটিং করেছিলেন দীপিকা। এছাড়াও ভারতে চলমান লোকসভা নির্বাচনে বর রণবীরকে নিয়ে অসুস্থ শরীরেই ভোট দিতে গিয়েছিলেন তিনি।

আগামী সেপ্টেম্বরেই তারকা দম্পতি দীপিকা-রণবীরের ঘর আলো করে আসছে তাদের নতুন অতিথি।


আরও খবর



বছরে ক্ষতি প্রায় ৫৭ হাজার কোটি টাকা সাইবার অপরাধীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে

প্রকাশিত:সোমবার ১০ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৮ জুন ২০২৪ | ১৩২জন দেখেছেন

Image

23 ডেস্ক :

সাইবার অপরাধীদের ভয়ে দিনকে দিন তটস্থ হয়ে পড়ছে দেশবাসী। এসব অপরাধীর হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার না করেও সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন অনেকেই।

প্রযুক্তি উন্নত হওয়ায় ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ছে সাইবার অপরাধ। আপত্তিকর অ্যাকাউন্ট ও পেজ বন্ধ করার পাশাপাশি তদারকিতেও তেমন সুফল আসছে না। সাইবার হামলাসহ নানা ইস্যুতে বছরে ক্ষতি হয় প্রায় সাড়ে ৫৭ হাজার কোটি টাকা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাইবার অপরাধীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ব্যক্তিগত সচেতনতার বিকল্প নেই।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি পেজ থেকে ‘ম্যাজিক ডায়া টি’ নামে একটি বিজ্ঞাপন হইচই ফেলে দিয়েছে। বিজ্ঞাপনে দেশের খ্যাতিমান পোড়া রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেনের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। প্রচারিত বিজ্ঞাপনে ডা. সামন্ত লালের ছবি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যেন ‘ম্যাজিক ডায়া টি’ পান করলে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন। এমনকি নিয়মিত এই চা পান করলে চিরতরে ডায়াবেটিস ভালো হয়ে যাবে বলে প্রচারিত বিজ্ঞাপনে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে।এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডা. সামন্ত লাল সেন নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে যায়যায়দিনকে বলেন, আমি সাইবার অপরাধীদের যন্ত্রণায় আর পারছি না। ‘আমার কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। আমি ফেসবুক ব্যবহার করি না। অথচ এর আগেও আমার ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারক চক্র ও সাইবার অপরাধীরা নানা বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে। যার সত্যিকারের কোনো ভিত্তি নেই। এর আগে মাথায় চুল গজানোর বিজ্ঞাপন প্রচারের দায়ে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে  ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।তিনি আরও বলেন, সবশেষ আমার ছবি ব্যবহার করে চায়ের বিজ্ঞাপনের বিষয়টিও আমার নজরে এসেছে। আমি তাৎক্ষণিকভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়েছি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘অপরাধীদের গ্রেপ্তার করলেই কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। কারণ আমি মনে করি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। যা আমার সামাজিক মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করছে। কারণ যারা ইন্টারনেট বা সাইবার অপরাধীদের সম্পর্কে তেমন জানেন না, তারা হয়তো না বুঝেই আমাকে ভুল বুঝছেন। এটি সত্যিই আমাকে মানসিকভাবে পীড়া দিচ্ছে। আমি নানাভাবে চেষ্টা করেও সাইবার অপরাধী বা কুচক্রী মহলের হাত থেকে আমার নিজের সম্মানকে শতভাগ রক্ষা করতে পারছি না। আমি যেহেতু সরকারের একজন মন্ত্রী, স্বাভাবিক কারণেই এতে সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। দেশবাসী যেন এমন প্রতারণার ফাঁদে পা না দেন এবং বিশ্বাস না করেন, আমি দেশবাসীকে সেই অনুরোধ করছি’।

সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত নানা বিষয়ে এনটিএমসির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহ্সানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি যায়যায়দিনকে বলেন, প্রযুক্তি এখন নিত্য ব্যবহার্য জিনিসে পরিণত হয়েছে। যত নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে, তত নতুন নতুন অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। সাইবার অপরাধ বা হামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। একমাত্র সচেতনতাই পারে আপনারে সাইবার সংক্রান্ত অপরাধ থেকে মুক্ত রাখতে।

তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের শতভাগ সতর্ক থাকতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে হবে অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে। বিশেষ করে কোনো লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখেই বিশ্বাস করা যাবে না। এমনকি বিজ্ঞাপনে যেসব বিশিষ্ট ব্যক্তি বা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কর্মকর্তা বা ব্যক্তিদের ছবি ব্যববহার করা হয়, তাদের সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা বা বিশ্বাস রাখা উচিত। কারণ একজন খ্যাতিমান ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তি কোনোভাবেই এমন একটি জিনিসের বা পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে পারেন না, সর্বপ্রথম এটি বিশ্বাস করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপরিচিত লিঙ্ক আসে। না জেনে, না বুঝে এসব লিঙ্কে টাচ বা ক্লিক করা উচিত না। কারণ এতে ওই ব্যক্তির ব্যক্তিগত বা অন্য কোনো তথ্য চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করে অপপ্রচার, গুজব রটানো, লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে প্রতারিত করাসহ প্রযুক্তি খাতের নানা অপরাধ নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে কাজ চলছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সাইট, পেজ, অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। তারপরও সাইবার অপরাধীরা থেমে নেই। সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিতভাবে কাজ চলছে। আশা করা হচ্ছে, স্বল্প সময়ের মধ্যেই হয়তো সাইবার সংক্রান্ত নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাইবার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ১৪৮টি অ্যাকাউন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে মুছে ফেলেছে। তারপরও সাইবার অপরাধীদের দাপট কমেনি। উল্টো দেশে ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ছে সাইবার অপরাধ। তদারকি করেও তেমন কোনো সুফল মিলছে না। দেশে কত ধরনের সাইবার অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, কি পরিমাণ সাইবার অপরাধের ঘটনা ঘটেছে, কতগুলোর অপরাধের ঘটনায় অভিযোগ হয়েছে বা অপরাধীর সংখ্যা কত তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। মূলত প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, অপরাধের ধরনও তত উন্নত হচ্ছে। যে কারণে অপরাধীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কোনোভাবেই পেরে ওঠা যাচ্ছে না। প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধীদেরও শতভাগ আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।

সূত্রটি বলছে, বছরে গড়ে ছোট-বড় ৯০ হাজার সাইবার হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলাসহ সাইবারকেন্দ্রিক নানা ইস্যুতে বছরে ক্ষতি হয় গড়ে প্রায় সাড়ে ৫৭ হাজার কোটি টাকা। বিশ্বে মোবাইল গ্রাহকের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান দশম। দেশে ১৯ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। আর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটি। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধ।

সূত্রটি জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি সাইবার অপরাধের ঘটনা ঘটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে পূঁজি করে। অনেকেই আছেন যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন কিন্তু ফেসবুক, ইনসট্রাগ্রাম, ম্যাজেঞ্জার, ইমো, ইউটিউব বা ভাইভার ব্যবহার করেন না। শুধু যোগাযোগ রাখার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। তারাও রয়েছেন ঝুঁকিতে। এক কথায় প্রযুক্তি ব্যবহার করলে ঝুঁকি থেকে কোনোভাবেই মুক্ত থাকার সুযোগ নেই। তবে সাইবার অপরাধীদের একটি গতানুগতিক ধারা আছে, যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বেশি ব্যবহৃত হয়, সাইবার অপরাধীরা সেই মাধ্যমেই সাধারণত বেশি অপরাধ সংঘটিত করে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাইবার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঝুঁকিমুক্ত থাকার একমাত্র উপায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার না করা। যেটি বর্তমান সমাজে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। যে কারণে দিনকে দিন বাড়ছে সাইবার অপরাধীদের দাপট। ইমেইল আইডি, ফেসবুক আইডি, মোবাইল ব্যাংকিং থেকে শুরু করে এমন কোনো প্রযুক্তি নেই, যেটি হ্যাক বা যে মাধ্যম থেকে তথ্য চুরি বা প্রতারণার সম্ভাবনা নেই। এক কথায় যেসব ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহৃত হবে, সেখানে সাইবার হামলার বা সাইবারকেন্দ্রিক অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। কোনোভাবেই প্রযুক্তি খাতকে শতভাগ নিরাপদ করা সম্ভব হচ্ছে না।

সরকারের সাইবার নিরাপত্তা-সংক্রান্ত প্রকল্প কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (সার্ট) সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে হালনাগাদ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে মাত্র ৫টি ম্যালওয়ারের মাধ্যমে সাইবার অপরাধীরা ৬ হাজার ৫২১ বার আক্রমণ করেছে। যদিও সাইবার অপরাধীরা তেমন সফল হতে পারেননি। ব্যক্তিগত পর্যায়ে নারীরা সবচেয়ে বেশি সাইবার বোলিং বা হামলা বা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। সাইবারকেন্দ্রিক প্রতারণার শিকার হওয়াদের মধ্যে নারীর সংখ্যাই শতকরা ৪৭ ভাগ। বাকি সাইবার অপরাধের ঘটনা ঘটছে ব্যাংক, বীমা, মন্ত্রী, এমপি, স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, শিশু, কিশোরসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানিক পর্যায়ে।

প্রযুক্তিগত নানা অপরাধের বিষয়ে সিআইডির সাইবার বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. রেজাউল মাসুদ যায়যায়দিনকে বলেন, নিয়মিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাইবার মনিটরিং করা হচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধŸগতিসহ নানা ইস্যুতে কাজ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি ইউনিটে স্থাপিত হয়েছে একটি করে ক্লোজ মনিটরিং সেল। সেলগুলো বিটিআরসি ও এনটিএমসিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, সাইবার আইনে পরিবর্তন আনায় এ ধরনের অপরাধে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। তদন্তে পাওয়া তথ্য জানানো হয় বিটিআরসিকে। বিটিআরসি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রকৃত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে যেসব মাধ্যম বা পেজ বা অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অপরাধ বা প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়, সেগুলোর তালিকা দেয় বিটিআরসিকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে যে পরিমাণ সাইট বন্ধ করার প্রস্তাব করা হয় তার শতকরা ২০ শতাংশ বন্ধ হয়। বাকিগুলো নানা কারণে বন্ধ হয় না।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করা অক্টাগ্রাম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রযুক্তিবিদ হাসান শাহরিয়ার ফাহিম যায়যায়দিনকে বলেন, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন সম্মিলিত কৌশল। এজন্য প্রযুক্তির সঙ্গে জড়িত সবাইকে এক প্লাটফর্মে আসতে হবে। বিশেষ করে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোকে আরও স্বচ্ছতার সঙ্গে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ সাইবার অপরাধীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। এটি সত্যিই খুবই ভয়াবহ ব্যাপার। এখনই উচিত সমন্বিত কৌশলপত্র তৈরি করে মাঠে নামা। অন্যথায় সাইবার অপরাধীদের অপরাধের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।


আরও খবর