মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েলঃ মেঘনা নদীর ভাঙাগড়ার খেলায় দিশেহারা মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের ভর কালীপুরা গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার। ভাঙনের কবলে পড়ে গৃহহীন ও ভূমিহীন হয়ে অনেকেই ছেড়েছেন নিজের জন্মস্থান। পাড়ের মাটি ভাঙছে তো ভাঙছেই। প্রতিবছর এমন ভাঙন দেখা দিলেও তা রোধে নেওয়া হচ্ছে না কোনো স্থায়ী সমাধান।
মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকা কালীপুরা গ্রামে গত কয়েক দিন ধরেই দুর্দশার এই চিত্র দেখা যাচ্ছে। টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মেঘনা নদীতে ক্রমেই বাড়ছে পানি। এতে করে ভাঙন বেড়েই চলেছে মেঘনার তীরবর্তী এলাকা কালীপুরা গ্রাম। গত কয়েক দিনে দুটি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।অনেকেই ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।
কালীপুরা গ্রামের বয়োবৃদ্ধ সরাফত আলী প্রধান জানায়, নদীতে পানি বাড়ায় স্রোতে বসতভিটা ধসে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। ১০ বছর ধরে ভাঙন শুরু হয়েছে। বসতভিটার সামনে নদীর দিকে ৪০ শতক জমি ছিলো। ভাঙতে ভাঙতে এখন শুধু বাড়ির ঘরটিই অবশিষ্ট রয়েছে। মেঘনার ভাঙনে আজ ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে তিনি।
আরেক বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম বলেন, ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে এখন শুধু বাড়িটিই অবশিষ্ট রয়েছে। গেল কয়েক দিনের নদীতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানির স্রোত পূর্বে দিকে হওয়ায় নদীর পাড়ে ধস শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ঘর-বাড়ি নদীর গর্ভে চলে গেছে। ভাঙন ও ধস ঠেকাতে নদীতে জিও ব্যাগ ফেলার জোর দাবী জানাই।
নেছার উদ্দিন জানায়, হঠাৎ করে আবার ভাঙন শুরু হয়েছ। অনেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়ে অন্যা এলকায় চলে গেছে। এভাবে একের পর বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। যদি এটি রোধ না করা হয় তাহলে পরিবার পরিজন নিয়ে আমরা কি করে বাঁচব।
ইমামপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য ও কালীপুরা গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, নদীভাঙনের কবলে এলাকার ৫০থেকে ৬০টি পরিবারের বসতভিটা হুমকির মুখে রয়েছে। ইতিমধ্যে ১০থেকে ১২টি পরিবার ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয় কে জানানো হয়েছে।
এ ব্যপারে ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান হাফিজুজ্জামান খাঁন জিতু জানান, নদীভাঙন রোধে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী উপজেলার নদী ভাঙ্গন বিভিন্ন এলাকা গতকাল পরিদর্শন করে গেছেন। স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে আশা করি শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকরী পদক্ষেপ নেবেন।