Logo
আজঃ সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪
শিরোনাম

রাবনাবাদ নদী পাড়ের মানুষের আর্তনাদ শুনছে না কেউ

প্রকাশিত:শনিবার ২০ আগস্ট ২০22 | হালনাগাদ:সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪ | ৪১৮জন দেখেছেন

Image

মো.নাহিদুল হক,কলাপাড়া (পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: বৃষ্টি হলে ওরা কাঁদে, জোয়ার হলে ভাসে। প্রতিটি ঝড়-জলোচ্ছাসে ভেসে যায় একটু একটু করে তাদের স্বপ্ন। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। এমন চিত্র পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া, ধানখালী ও চাম্পপুর ইউনিয়নের রাবনাবাদ নদী পাড়ের গ্রামের মানুষের।

স্রোতের টানে মানুষ ভেসে বেড়ালেও তাদের আর্তনাদ কেউ শুনছে না। সরেজমিনে দুর্গত এলাকা ঘুরে শোনা যায় মানুষের কষ্টের কথা। এসব এলাকার মানুষ বেঁচে আছে ঠিক যেন দুর্ভিক্ষের ছবির মতো।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার রাবনাবাদ নদী পাড়ের বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ কোথাও কোথাও মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। আবার ঢেউয়ের তোড়ে অনেকের বসতঘর ভেঙ্গে ভেসে গেছে । ছেলে-মেয়ে নিয়ে এখন আশ্রয় নিয়েছে অন্যের জায়গায় কিংবা বেরিবাঁধের উপর। ধানখালী ও চাম্পপুর ইউনিয়নের দেবপুর ও নিশানবাড়িয়া এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। মানুষ এখন বসবাসের অবস্থাও হারিয়ে ফেলছে। গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি পালন বন্ধের উপক্রম হয়েছে। কৃষকরা বীজতলা করতে পারছে না।

এমন কী সন্তানদের স্কুল মাদ্রাসায় যাওয়া পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে। অমাবস্যা-পূর্ণিমা আসলেই জোয়ারের পানিতে ভাসতে থাকে ওইসব গ্রামের মানুষ। তবে পায়রা বন্দর অধিগ্রহণ করায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে নতুন করে বাঁধ নির্মাণ কিংবা পুরনো বেড়িবাঁধ মেরামত করছে না। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পরেছে কৃষকরা এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

লালুয়া ইউনিয়নের রাবনাবাদ নদীর পাড়ে চর চান্দুপাড়া গ্রামের গৃহবধু রওশনারা বেগম বলেন, জোয়ারের পানিতে বসতবাড়ি তলইয়া যায়। এসময় ঘরে থাকা তো দুরে কথা রান্নাবান্নও বন্ধ হইয়া যায়। ধানখালী ইউনিয়নের দেবপুর গ্রামের ৭০ উর্ধ্বো বৃদ্ধ মো.বজলু হাওলাদার বলেন, গত জোয়ারের পানিতে ঘরের মালামাল ভাসাইয়া লইয়া গ্যাছে। আমি বুড়া মানু দিন রাইত চহির উপর উড্ডা বইয়া থাকছি। কবে যে বানডা ঠিক হইবে। কইতে পারিনা। একই গ্রামের শাহিনুর বেগম বলেন, জোয়ারের পানি বাড়লেই বাড়ি-ঘর ডুইব্যা যায়, ভাডার সময় হুগায়।

ধানখালী ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা গাজী রাইসুল ইসলাম রাজিব বলেন, অমাবস্যা-পূর্ণিমা আসলেই বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে মানুষের ঘড়-বাড়ি, ফসলি ক্ষেত তলিয়ে যায়। এর ফলে এসব গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। 

ধানখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়াজ তালুকদার জানান, দেবপুরের বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত থাকায় তার ইউনিয়নে নিশানবাড়িয়া, পাচজুনিয়া, লোন্দা গ্রাম জোয়ারের পানিতে ভাসে। ভাটার সময় পানি কমে গেলেও ফের জোয়ারের সময় ডুবে থাকে। এ তিন গ্রামের কৃষকের চাষাবাদ তো দূরের কথা, তাদের দূর্ভোগের সীমা নাই। 

লালুয়ার চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, রাবনাবাদপাড়ের দীর্ঘ ছয় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত রয়েছে। মানুষের বাড়িঘর সম্পদ সব অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনা পারভীন সীমা বলেন, তিনি রাবনাবাদ নদী পাড়ের বিভিন্ন গ্রাম পরিদর্শন করেছেন। এসময় পানি বন্দী গ্রামের ১৭৬০ পরিবারের মাঝে নারী উন্নয়ন ফোরামের পক্ষ থেকে রান্না করা খাবার, পানি, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরন ঔষধ বিতরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।



আরও খবর



রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তিনজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।

প্রকাশিত:সোমবার ১০ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ৩০ জুন ২০২৪ | ১৪৯জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে আরও তিনজন। তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার (১০ জুন) ভোরে জেলার উখিয়া উপজেলার চার নম্বর (এক্সটেনশন) রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ ব্লকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, ওই ক্যাম্পের এফ ব্লকের জাফর আহম্মদের ছেলে মো. ইলিয়াছ (৩১), মৃত আব্দুর রকিমের ছেলে মো. ইছহাক (৫৪) ও ক্যাম্প-৩-এর ই ব্লকের মো. ইসমাইলের ছেলে ফিরোজ খান (১৮)।

আহতরা হলেন- ক্যাম্পের এফ ব্লকের হাছানের ছেলে আব্দুল হক (৩২), নজির আহাম্মদের ছেলে আব্দুস শুক্কুর (৫৫) ও মৃত ওমর মিয়ার ছেলে আব্দুল মোনাফ (৬০)।

সূত্র জানিয়েছে, ভোর পৌনে চারটার দিকে রোহিঙ্গা মো. ইলিয়াছকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সদস্যরা গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাতে, পায়ে, তলপেটে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়।

এরপরে, ভোর সোয়া চারটার দিকে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আরএসও সমর্থক মো. ইছহাক, ফিরোজ খান, আব্দুল হক, আব্দুস শুক্কুর ও আব্দুল মোনাফকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে।

ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, প্রথমে নিহত রোহিঙ্গা ইলিয়াছ আরসার সোর্স হিসেবে কাজ করতো। আরসা সম্পর্কে তথ্য দিতে রাজি না হওয়ায় আরএসও সদস্যরা প্রথমে তাকে হত্যা করে। পরে ঘটনার খবর পেয়ে আরসা সদস্যরা এসে কয়েকজন আরএসও সমর্থকের ওপর এলোপাতাড়ি হামলা চালায়।

ঘটনার পরে আহত রোহিঙ্গাদের চিকিৎসার জন্য উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. ইছহাক ও ফিরোজ খানকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শামীম হোসেন জানান, নিহতদের মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মো. ইকবাল বলেন, একজন ঘটনাস্থলে মারা যায়। দুজন আহত অবস্থায় হাসপাতালে মারা যায়। বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।


আরও খবর



ঈদুল আজহা ১৭ জুন, চাঁদ দেখা গেছে

প্রকাশিত:সোমবার ১০ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ৩০ জুন ২০২৪ | ১৩৮জন দেখেছেন

Image

 23 ডেস্ক :

হিজরি ১৪৪৫ সনের পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। তাই আগামী ১৭ জুন সোমবার পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার (৭ জুন) ইসলামিক ফাউন্ডেশনে অনুষ্ঠিত জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় একথা জানানো হয়।মুসলমানদের দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব                                           

 ঈদুল আজহা বা কোরবারি ঈদ। ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর এই ঈদে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করে থাকেন।


আরও খবর



এবার ঈদে শ্রোতাদের বাংলা ও হিন্দি গান শোনাবেন ড. মাহফুজুর রহমান

প্রকাশিত:সোমবার ১০ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪ | ১২৪জন দেখেছেন

Image

23 বিনোদন ডেস্ক

দর্শকদের এবারের ঈদেও একক গান শোনাবেন কণ্ঠশিল্পী ড. মাহফুজুর রহমান। এবারে ২ টি সঙ্গীতানুষ্ঠান নিয়ে আসছেন তিনি। সঙ্গীতের প্রতি তার রয়েছে অসম্ভব ভালোবাসা। আর তাইতো নিজেই যুক্ত হয়েছেন গানের ভুবনে। ২০১৬ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রচার হচ্ছে তার গাওয়া গান নিয়ে একক সঙ্গীতানুষ্ঠান।

এ ধারাবাহিকতায় এবারের ঈদেও তার গাওয়া একগুচ্ছ গান নিয়ে ঈদের দিন রাত ১০.৩০ মিনিটে প্রচার হবে একক সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘আমার চোখের আলো’। অনুষ্ঠানে রয়েছে মোট ১০ টি গান। অ্যালবামের গানগুলোতে সুরারোপ করেছেন মান্নান মোহাম্মদ ও রাজেশ ঘোষ। বাংলা গানের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে থাকছে জনপ্রিয় কয়েকটি হিন্দি গান। অ্যালবামে রয়েছে নীলে নীলে আম্বার, দিল দে দিয়া হ্যায়, হামে অর জিনে কি, জিনা ইয়াহান মারনা ইয়াহান, আমার চোখের আলো, তুমি তো জানো না প্রিয়, তোমার নিঃশ্বাসে বিষ ছিল, চুপ কেন তুমি চুপ কেন এবং প্রথম প্রেম শিরোনামের গান।

এছাড়া ঈদের পরদিন রাত ১০.৩০ মিনিটে প্রচার হবে দ্বৈত গানের সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘ওয়াদা করো’। অনুষ্ঠানে থাকছে কেহেদু তুমছে, তুঝে দেখা তু ইয়ে, মুঝে দিলসে ভুলানা, মেরা দিল ভি কিতনা পাগল, ঢোলনা, তু চিজ বাড়ি হ্যায় মাস্ত মাস্ত, ওয়াদা কারো, সাস মে তেরি, তু তু হ্যায় ওয়াহি দিলনে এবং কিতনি বেচেইন হোকে শিরোনামের গান। ডুয়েট গানগুলোতে ড. মাহফুজুর রহমানের সহশিল্পী হিসেবে রয়েছেন নীলিমা, ভাবনা আহমেদ ও তাহমিনা


আরও খবর



বছরে ক্ষতি প্রায় ৫৭ হাজার কোটি টাকা সাইবার অপরাধীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে

প্রকাশিত:সোমবার ১০ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ৩০ জুন ২০২৪ | ১৪১জন দেখেছেন

Image

23 ডেস্ক :

সাইবার অপরাধীদের ভয়ে দিনকে দিন তটস্থ হয়ে পড়ছে দেশবাসী। এসব অপরাধীর হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার না করেও সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন অনেকেই।

প্রযুক্তি উন্নত হওয়ায় ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ছে সাইবার অপরাধ। আপত্তিকর অ্যাকাউন্ট ও পেজ বন্ধ করার পাশাপাশি তদারকিতেও তেমন সুফল আসছে না। সাইবার হামলাসহ নানা ইস্যুতে বছরে ক্ষতি হয় প্রায় সাড়ে ৫৭ হাজার কোটি টাকা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাইবার অপরাধীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ব্যক্তিগত সচেতনতার বিকল্প নেই।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি পেজ থেকে ‘ম্যাজিক ডায়া টি’ নামে একটি বিজ্ঞাপন হইচই ফেলে দিয়েছে। বিজ্ঞাপনে দেশের খ্যাতিমান পোড়া রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেনের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। প্রচারিত বিজ্ঞাপনে ডা. সামন্ত লালের ছবি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যেন ‘ম্যাজিক ডায়া টি’ পান করলে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন। এমনকি নিয়মিত এই চা পান করলে চিরতরে ডায়াবেটিস ভালো হয়ে যাবে বলে প্রচারিত বিজ্ঞাপনে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে।এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডা. সামন্ত লাল সেন নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে যায়যায়দিনকে বলেন, আমি সাইবার অপরাধীদের যন্ত্রণায় আর পারছি না। ‘আমার কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। আমি ফেসবুক ব্যবহার করি না। অথচ এর আগেও আমার ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারক চক্র ও সাইবার অপরাধীরা নানা বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে। যার সত্যিকারের কোনো ভিত্তি নেই। এর আগে মাথায় চুল গজানোর বিজ্ঞাপন প্রচারের দায়ে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে  ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।তিনি আরও বলেন, সবশেষ আমার ছবি ব্যবহার করে চায়ের বিজ্ঞাপনের বিষয়টিও আমার নজরে এসেছে। আমি তাৎক্ষণিকভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়েছি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘অপরাধীদের গ্রেপ্তার করলেই কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। কারণ আমি মনে করি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। যা আমার সামাজিক মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করছে। কারণ যারা ইন্টারনেট বা সাইবার অপরাধীদের সম্পর্কে তেমন জানেন না, তারা হয়তো না বুঝেই আমাকে ভুল বুঝছেন। এটি সত্যিই আমাকে মানসিকভাবে পীড়া দিচ্ছে। আমি নানাভাবে চেষ্টা করেও সাইবার অপরাধী বা কুচক্রী মহলের হাত থেকে আমার নিজের সম্মানকে শতভাগ রক্ষা করতে পারছি না। আমি যেহেতু সরকারের একজন মন্ত্রী, স্বাভাবিক কারণেই এতে সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। দেশবাসী যেন এমন প্রতারণার ফাঁদে পা না দেন এবং বিশ্বাস না করেন, আমি দেশবাসীকে সেই অনুরোধ করছি’।

সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত নানা বিষয়ে এনটিএমসির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহ্সানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি যায়যায়দিনকে বলেন, প্রযুক্তি এখন নিত্য ব্যবহার্য জিনিসে পরিণত হয়েছে। যত নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে, তত নতুন নতুন অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। সাইবার অপরাধ বা হামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। একমাত্র সচেতনতাই পারে আপনারে সাইবার সংক্রান্ত অপরাধ থেকে মুক্ত রাখতে।

তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের শতভাগ সতর্ক থাকতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে হবে অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে। বিশেষ করে কোনো লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখেই বিশ্বাস করা যাবে না। এমনকি বিজ্ঞাপনে যেসব বিশিষ্ট ব্যক্তি বা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কর্মকর্তা বা ব্যক্তিদের ছবি ব্যববহার করা হয়, তাদের সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা বা বিশ্বাস রাখা উচিত। কারণ একজন খ্যাতিমান ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্যক্তি কোনোভাবেই এমন একটি জিনিসের বা পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে পারেন না, সর্বপ্রথম এটি বিশ্বাস করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপরিচিত লিঙ্ক আসে। না জেনে, না বুঝে এসব লিঙ্কে টাচ বা ক্লিক করা উচিত না। কারণ এতে ওই ব্যক্তির ব্যক্তিগত বা অন্য কোনো তথ্য চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করে অপপ্রচার, গুজব রটানো, লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে প্রতারিত করাসহ প্রযুক্তি খাতের নানা অপরাধ নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে কাজ চলছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সাইট, পেজ, অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। তারপরও সাইবার অপরাধীরা থেমে নেই। সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিতভাবে কাজ চলছে। আশা করা হচ্ছে, স্বল্প সময়ের মধ্যেই হয়তো সাইবার সংক্রান্ত নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাইবার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ১৪৮টি অ্যাকাউন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে মুছে ফেলেছে। তারপরও সাইবার অপরাধীদের দাপট কমেনি। উল্টো দেশে ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ছে সাইবার অপরাধ। তদারকি করেও তেমন কোনো সুফল মিলছে না। দেশে কত ধরনের সাইবার অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, কি পরিমাণ সাইবার অপরাধের ঘটনা ঘটেছে, কতগুলোর অপরাধের ঘটনায় অভিযোগ হয়েছে বা অপরাধীর সংখ্যা কত তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। মূলত প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, অপরাধের ধরনও তত উন্নত হচ্ছে। যে কারণে অপরাধীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কোনোভাবেই পেরে ওঠা যাচ্ছে না। প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধীদেরও শতভাগ আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।

সূত্রটি বলছে, বছরে গড়ে ছোট-বড় ৯০ হাজার সাইবার হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলাসহ সাইবারকেন্দ্রিক নানা ইস্যুতে বছরে ক্ষতি হয় গড়ে প্রায় সাড়ে ৫৭ হাজার কোটি টাকা। বিশ্বে মোবাইল গ্রাহকের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান দশম। দেশে ১৯ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। আর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটি। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধ।

সূত্রটি জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি সাইবার অপরাধের ঘটনা ঘটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে পূঁজি করে। অনেকেই আছেন যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন কিন্তু ফেসবুক, ইনসট্রাগ্রাম, ম্যাজেঞ্জার, ইমো, ইউটিউব বা ভাইভার ব্যবহার করেন না। শুধু যোগাযোগ রাখার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। তারাও রয়েছেন ঝুঁকিতে। এক কথায় প্রযুক্তি ব্যবহার করলে ঝুঁকি থেকে কোনোভাবেই মুক্ত থাকার সুযোগ নেই। তবে সাইবার অপরাধীদের একটি গতানুগতিক ধারা আছে, যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বেশি ব্যবহৃত হয়, সাইবার অপরাধীরা সেই মাধ্যমেই সাধারণত বেশি অপরাধ সংঘটিত করে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাইবার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঝুঁকিমুক্ত থাকার একমাত্র উপায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার না করা। যেটি বর্তমান সমাজে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। যে কারণে দিনকে দিন বাড়ছে সাইবার অপরাধীদের দাপট। ইমেইল আইডি, ফেসবুক আইডি, মোবাইল ব্যাংকিং থেকে শুরু করে এমন কোনো প্রযুক্তি নেই, যেটি হ্যাক বা যে মাধ্যম থেকে তথ্য চুরি বা প্রতারণার সম্ভাবনা নেই। এক কথায় যেসব ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহৃত হবে, সেখানে সাইবার হামলার বা সাইবারকেন্দ্রিক অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। কোনোভাবেই প্রযুক্তি খাতকে শতভাগ নিরাপদ করা সম্ভব হচ্ছে না।

সরকারের সাইবার নিরাপত্তা-সংক্রান্ত প্রকল্প কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (সার্ট) সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে হালনাগাদ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে মাত্র ৫টি ম্যালওয়ারের মাধ্যমে সাইবার অপরাধীরা ৬ হাজার ৫২১ বার আক্রমণ করেছে। যদিও সাইবার অপরাধীরা তেমন সফল হতে পারেননি। ব্যক্তিগত পর্যায়ে নারীরা সবচেয়ে বেশি সাইবার বোলিং বা হামলা বা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। সাইবারকেন্দ্রিক প্রতারণার শিকার হওয়াদের মধ্যে নারীর সংখ্যাই শতকরা ৪৭ ভাগ। বাকি সাইবার অপরাধের ঘটনা ঘটছে ব্যাংক, বীমা, মন্ত্রী, এমপি, স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, শিশু, কিশোরসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানিক পর্যায়ে।

প্রযুক্তিগত নানা অপরাধের বিষয়ে সিআইডির সাইবার বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. রেজাউল মাসুদ যায়যায়দিনকে বলেন, নিয়মিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাইবার মনিটরিং করা হচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধŸগতিসহ নানা ইস্যুতে কাজ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি ইউনিটে স্থাপিত হয়েছে একটি করে ক্লোজ মনিটরিং সেল। সেলগুলো বিটিআরসি ও এনটিএমসিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, সাইবার আইনে পরিবর্তন আনায় এ ধরনের অপরাধে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। তদন্তে পাওয়া তথ্য জানানো হয় বিটিআরসিকে। বিটিআরসি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রকৃত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে যেসব মাধ্যম বা পেজ বা অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অপরাধ বা প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়, সেগুলোর তালিকা দেয় বিটিআরসিকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে যে পরিমাণ সাইট বন্ধ করার প্রস্তাব করা হয় তার শতকরা ২০ শতাংশ বন্ধ হয়। বাকিগুলো নানা কারণে বন্ধ হয় না।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করা অক্টাগ্রাম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রযুক্তিবিদ হাসান শাহরিয়ার ফাহিম যায়যায়দিনকে বলেন, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন সম্মিলিত কৌশল। এজন্য প্রযুক্তির সঙ্গে জড়িত সবাইকে এক প্লাটফর্মে আসতে হবে। বিশেষ করে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোকে আরও স্বচ্ছতার সঙ্গে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ সাইবার অপরাধীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছে। এটি সত্যিই খুবই ভয়াবহ ব্যাপার। এখনই উচিত সমন্বিত কৌশলপত্র তৈরি করে মাঠে নামা। অন্যথায় সাইবার অপরাধীদের অপরাধের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।


আরও খবর



শো-রুম খুলে দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

প্রকাশিত:সোমবার ১০ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪ | ১৪০জন দেখেছেন

Image

23 ডেস্ক :

ফেসবুক লাইভে এসে পণ্য বিক্রির সময় নানা বিতর্তিক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ও মন্তব্য করে আলোচিত-সমালোচিত উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতিমা তনির মালিকানাধীন ‘সানভীস বাই তনি’র গুলশানের শো-রুম খুলে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে শো-রুমে পাকিস্তানি ড্রেস বিক্রি করা যাবে নাআজ সোমবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে তনির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. খালেকুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ ও আনিচ উল মাওয়া।

এর আগে গত ৬ জুন ‘সানভীস বাই তনি’র গুলশানের শো-রুম সিলগালা করা কেন অবৈধ হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়। একইসঙ্গে এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। তার আগে ২৭ মে ‘সানভীস বাই তনি’র গুশনারের শো-রুম সিলগালা করা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এর আগে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক ‘সানভীস বাই তনি’র গুলশানের শো-রুম সিলগালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন রোবাইয়াত ফাতেমা তনি।

গত ১৪ মে ‘সানভীস বাই তনি’র গুলশান শাখায় অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। পরে প্রতারণার অভিযোগে শো-রুমটি বন্ধ করে দেয় তারা। ‘সানবীস বাই তনি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ, দেশে তৈরি পোশাক পাকিস্তানি বলে বেশি দামে বিক্রি করত প্রতিষ্ঠানটি।

ওই অভিযানের নেতৃত্ব দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল। পরে ভোক্তা অধিকার ও জব্বার মন্ডলের বিরুদ্ধে হয়রানি, মানহানি এবং ব্যবসা বন্ধ করে দিতে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন রোবাইয়াত ফাতিমা তনি, করেন হাইকোর্টে রিট। বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত।  


আরও খবর