![Image](https://cdn.channel23.news/images/db5149f6ec37193dc6bbc602f1dcd125.jpeg)
গাজা উপত্যকা এবং পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে 'জঘন্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ' প্রশ্নে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসঙ্ঘ বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফিলিস্তিনি নারীদের নির্বিচারে হত্যা, আটক, ধর্ষণ বা যৌন সহিংসতার হুমকি দেয়া হচ্ছে। তারা আরো বলেন, 'এসব অভিযোগ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইরে মারাত্মক লঙ্ঘন' এবং আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইনের আওতায জঘন্য অপরাধ-তুল্য' বিবেচিত হতে পারে, যা রোম চুক্তির অধীনে বিচারযোগ্য।
বিশেষজ্ঞরা অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনার জন্য এবং ঘটনার শিকার পরিবারগুলোর 'পূর্ণ প্রতিকার ও ন্যায়বিচার' পাওয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।বিশেষজ্ঞরা গাজায় ফিলিস্তিনি নারী ও মেয়েদের নির্বিচারে হত্যার উদাহরণ উল্লেখ করে বলেন, অনেক সময় তাদের সন্তানসহ পরিবার সদস্যদের সাথে হত্যা করা হয়ে থাকে।
তারা বলেন, 'ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুরা যখন আশ্রয় গ্রহণ করতে চায় কিংবা পালাতে থাকে, তখনো তাদেরকে টার্গেট করা বিচার-বহির্ভূতভাবে হত্যা করার খবরে আমরা শোকাভিভূত।' তিনি বলেন, 'কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বা সহযোগী বাহিনী যখন তাদেরকে হত্যা করে, তখন তাদের হাতে সাদা কাপড়ের টুকরা ছিল।'
নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে রয়েছেন রিম আলসালেম। তিনি নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে সহিংসতাবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোটিয়ার। এছাড়া আছেন ফ্রানসেসকা আলবানিস। তিনি ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে মানবাধিকার পরিস্থিতিবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোটিয়ার। তারা ৭ অক্টোবর থেকে গাজা ও পশ্চিম তীরে মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, মানবিক সহায়তাকর্মীসহ শত শত ফিলিস্তিনি নারী ও মেয়েকে নির্বিচারে আটকেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাদের সাথে 'অমানবিক ও অমর্যাদাপূর্ণ আচরণ করা হয়, মেনস্ট্রয়েশন প্যাড, খাবার ও ওষুধ দেয়া হয় না, ভয়াবহভাবে প্রহার করা হয়।' তারা একটি উদাহরণ উল্লেখ করে বলেন যে নারী বন্দীদের খাঁচায় আটকে রেখে বৃষ্টি ও ঠান্ডার মধ্যে খাবারবিহীন ফেলে রাখা হয়েছিল।
জাতিসঙ্ঘ বিশেষজ্ঞরা নগ্ন করে প্রহার করা, পুরুষ ইসরাইলি সৈন্য দিয়ে দেহ তল্লাসী চালানোসহ ফিলিস্তিনি নারী বন্দীদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের যৌন আক্রমণের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, 'অন্তত দুই নারী ফিলিস্তিনি বন্দীকে ধর্ষণ করার খবর পাওয়া গেছে এবং অন্যদেরকে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার হুমকি দেয়া হয়েছে।' তারা বলেন, ইসরাইলি সৈন্যরা 'অমর্যাদাজনক পরিস্থিতিতে' নারী বন্দীদের ছবি তুলে তা অনলাইনে আপলোড করে।
তারা আরো উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন যে গাজায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সংস্পর্শে আশার পর 'অজ্ঞাত সংখ্যক ফিলিস্তিনি নারী ও শিশু ও মেয়ে' নিখোঁজ হয়ে গেছে। তারা বলেন, 'এমন উদ্বেগজনক খবরও আছে যে অন্তত একটি ক্ষেত্রে এক সদ্যজাত মেয়ে শিশুকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী ইসরাইলে সরিয়ে নিয়েছিল, এবং শিশুদেরকে তাদের মা-বাবার কাছ থেকে সরিয়ে নেয়ার পর তাদের অবস্থান এখনো অজ্ঞাত রয়ে গেছে।'
বিশেষজ্ঞরা বলেন, 'ফিলিস্তিন নারী ও মেয়েদের জীবন, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও মর্যাদা সমুন্নত রাখা এবং যৌন নির্যাতনসহ সহিংসতা, নির্যাতন, অসদাচরণ বা অমর্যাদাজনক আচরণের শিকার যাতে কেউ না হয় সে ব্যাপারে ইসরাইলি সরকারের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।' বিশেষজ্ঞরা এসব অভিযোগের ব্যাপারে স্বতন্ত্র, নিরপেক্ষ, তাৎক্ষণিক, পূর্ণাঙ্গ ও কার্যকর তদন্ত করার এবং ইসরাইলকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।