Logo
আজঃ বৃহস্পতিবার ১৬ জানুয়ারী ২০২৫
শিরোনাম

অন্তরের মরিচা দূর করতে করণীয়

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ জানুয়ারী ২০২৫ | ৮৩৫জন দেখেছেন

Image

গুনাহ মানুষের অন্তরে মরিচা ফেলে। ফলে মানুষের অন্তর পাপপ্রবণ হয়ে ওঠে। ইবাদতে অনিহা সৃষ্টি হয়। ভালো কাজে অবহেলা বাড়ে, মন্দ কাজে প্রবল আগ্রহ সৃষ্টি হয়।

তাই অন্তরে যাতে মরিচা না পড়ে কিংবা পড়লেও তা যাতে দ্রুত পরিষ্কার করা যায়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। অন্তরের মরিচা দূর করার পদ্ধতিও নবীজি (সা.) শিখিয়ে দিয়েছেন। নিম্নে তার কয়েকটি তুলে ধরা হলো : বেশি বেশি তাওবা-ইস্তেগফার করা : ইস্তেগফার অন্তরের মরিচা দূর করে, অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে। তাই মুমিনের উচিত, অন্তরের পরিচ্ছন্নতার জন্য বেশি বেশি ইস্তেগফার করা। 

আমাদের প্রিয় নবীজি (সা.)-ও এই আমল করতেন। ইরশাদ হয়েছে, আগার আল-মুজানি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, কখনো কখনো আমার অন্তরের ওপরও মরিচা পড়ে। তাই আমি দৈনিক এক শবার ক্ষমা চাই। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫১৫) অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, বান্দা যখন একটি গুনাহ করে তখন তার অন্তরের মধ্যে একটি কালো চিহ্ন পড়ে।

অতঃপর যখন সে গুনাহর কাজ পরিহার করে, ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং তাওবা করে, তার অন্তর তখন পরিষ্কার ও দাগমুক্ত হয়ে যায়। সে আবার পাপ করলে তার অন্তরে দাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং তার পুরো অন্তর এভাবে কালো দাগে ঢেকে যায়। এটাই সেই মরিচা, আল্লাহ তাআলা যার বর্ণনা করেছেন, ‘কখনো নয়, বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের মনে জং (মরিচা) ধরিয়েছে।’ (সুরা মুত্বাফফিফীন : ১৪)।  (তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৩৪)

মৃত্যুর স্মরণ ও কোরআন তিলাওয়াত : এ দুটি আমলও অন্তরের মরিচা পরিষ্কার করে।অন্তরে মহান আল্লাহর ভালোবাসা বৃদ্ধি করে। তাই নবীজি (সা.) অন্তরের শুদ্ধতার জন্য সাহাবায়ে কেরামকে বেশি বেশি এই আমলগুলো করার তাগিদ দিতেন। আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই হৃদয়ে মরিচা ধরে, যেভাবে পানি লাগলে লোহায় মরিচা ধরে। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল, এ মরিচা দূর করার উপায় কী? তিনি (সা.) বলেন, বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করা ও কোরআন তিলাওয়াত করা। (শুআবুল ঈমান, হাদিস : ১৮৫৯)

ফিতনা এড়িয়ে চলা : ফিতনা-ফাসাদ মানুষের অন্তরকে কলুষিত করে। মুমিনের উচিত সর্বদা ফিতনা এড়িয়ে চলা। অন্তরকে পরিশুদ্ধ রাখার চেষ্টা করা। হুজাইফা (রা.) বলেন, একদিন আমরা উমার (রা.)-এর কাছে ছিলাম। তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে কে রাসুল (সা.)-কে ফিতনা সম্পর্কে আলোচনা করতে শুনেছ? উপস্থিত একদল বলেন, আমরা শুনেছি। উমার (রা.) বলেন, তোমরা হয়তো একজনের পরিবার ও প্রতিবেশীর ফিতনার কথা মনে করেছ। তারা বলেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি বলেন, নামাজ, রোজা ও সদকার মাধ্যমে এগুলোর কাফফারাহ হয়ে যায়। কিন্তু তোমাদের মধ্যে কে রাসুল (সা.) থেকে বড় বড় ফিতনার কথা বর্ণনা করতে শুনেছ, যা সমুদ্র তরঙ্গের মতো ধেয়ে আসবে। হুজাইফা (রা.) বলেন, প্রশ্ন শুনে সবাই চুপ হয়ে গেল। আমি বললাম, আমি (শুনেছি)। উমার (রা.) বলেন, তুমি শুনেছ, মাশাআল্লাহ। 

হুজাইফা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, চাটাই বুননের মতো এক এক করে ফিতনা মানুষের অন্তরে আসতে থাকে। যে অন্তরে তা গেঁথে যায় তাতে একটি করে কালো দাগ পড়ে। আর যে অন্তর তা প্রত্যাখ্যান করবে তাতে একটি উজ্জ্বল দাগ পড়বে। এমনি করে দুটি অন্তর দুই ধরনের হয়ে যায়। এটি সাদা পাথরের মতো; আসমান ও জমিন যত দিন থাকবে তত দিন কোনো ফিতনা তার কোনো ক্ষতি করতে পারে না। আর অপরটি হয়ে যায় উল্টানো সাদা মিশ্রিত কলসির মতো, তার প্রবৃত্তির মধ্যে যা গেছে তা ছাড়া ভালো-মন্দ বলতে সে কিছুই চিনে না।


আরও খবর



জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণীয় শিক্ষা সফর

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ১২২জন দেখেছেন

Image

মনিরুজ্জামান বাদল (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়): আজ আমার জীবনের ভ্রমণ কাহিনির মধ্যে শ্রেষ্ঠ একটি কাহিনি শিক্ষা সফর। আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স প্রোগ্রামের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। সেই হিসেবে আমিও শিক্ষা সফরের একজন প্রান্তিক যাত্রী। বাস ধীরে ধীরে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে নবাবপুর রোড হয়ে যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভারের দিকে দ্রুত বাস এগিয়ে চললো নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও পানামা নগরের উদ্দেশ্যে। আমরা সকাল নয়টার মধ্যে পানামা নগরের খুব কাছাকাছি চলে গেলাম। বাস রিসোর্টের কাছাকাছি পৌঁছাতেই সবার কাছে মনে হলো যেন সমুদ্র জয় করে আসছে, কারণ প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের মনে একটা টানটান উত্তেজনা কাজ করেছে। বাসচালক এতটাই বেপরোয়া ছিল, সমস্ত রাস্তায় মনে হয়েছিল এই বুঝি এক্সিডেন্ট করবে- করবে ভাব, সত্যি কথা হলো বাসচালক অত্যন্ত দক্ষ একজন চালক। খুব দ্রুত গাড়ি ড্রাইভ করলেও তার কন্ট্রোলিং পাওয়ার ছিল প্রশংসার দাবিদার।

 

পানামা নগরের পাশেই রয়েছে একটি লেইকপাড়, লেইকের উপর রয়েছে নান্দনিক ধনুকের মত বাঁকানো কংক্রিটের ব্রীজ। আমরা ব্রীজ পার হয়ে লেইকের বিপরীত পার্শ্বে। যথারীতি সবাই বাস থেকে নেমে স্মৃতির পাতায় ধরে রাখতেই শিক্ষক ও সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটা গ্রুপ ছবি তুলে নিলাম।

 

ধীরে ধীরে সবাই টিকেট কাউন্টারে যেয়ে টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করবে। ভেতরে প্রবেশদ্বারের একপ্রান্তে রয়েছে শ্বেত পাথরের উপর খুদাই করে রচিত পানামা নগরের ইতিকথা। কেউ কেউ খুব আগ্রহভরে পড়ে নিলো। আমিও জানার আগ্রহে সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ে নিলাম। ভেতরে প্রবেশ করেই যেই বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো ধাক্কা খেলাম। সেটা হলো সেখানে মোট ৫২ টি ভবন রয়েছে। প্রতিটি ভবন খুবই ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভবনের ছাদ থেকে প্রাচীন ইটগুলো খুলে খুলে পড়ছে।

 

দেয়ালের ইটগুলো দেখলে মনে হয় বুড়ো মানুষের ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতের মত সুচালো হয়ে আছে। ভবনগুলোর ছাঁদে, দেয়ালে দেয়ালে পরগাছা বৃক্ষের চারাগুলো তরতর করে গগণ ছুঁয়ে দেখার মিনতি দেখাচ্ছে। ভবনের জীর্ণ শীর্ণ নাজুক অবস্থা দেখে অনূভুত হলো আপন জনের প্রতি দূরত্বটা বেড়ে গেলে দূরের লোকগুলো উড়ে এসে জুড়ে বসতে চায়। দেয়ালে শুধু ইটের কারুকাজ দেখে বিস্মিত না হয়ে পার পাওয়ার জো নেই। ভেতরে ঘুটঘুটে নিকচ কালো অন্ধকার! সন্ধ্যে হলেই ভূতের আনাগোনা নিশ্চিত বেড়ে যায়। তারআগে আমি সেখানে শ্বেতপাথরে সুলতানি বাংলার অন্যতম রাজধানীর সম্পর্কে চলুন জেনে নেয়া যাক।



"হাজার বছরের প্রাচীন নগর সুবর্ণগ্রাম ছিল পূর্ব বাংলার অন্যতম রাজধানী ও নদীবন্দর। আজকের সোনারগাঁ প্রাচীন সুবর্ণগ্রাম বলে ঐতিহাসিকগণ মনে করেন। এই সুবর্ণগ্রামেই তের শতকের স্থানীয় হিন্দু রাজা দনুজমাধব দশরথদেব তাঁর শাসনকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গ অঞ্চল মুসলিম শাসনে আসার পর থেকে ১৬১০ সালের পূর্ব পর্যন্ত সোনারগাঁ ছিল স্বাধীন সুলতানী বাংলার অন্যতম রাজধানী ও প্রশাসনিক কেন্দ্র।

 

ঔপনিবেশিক সময়কালে ও এই এলাকায় বাণিজ্যিক, আবাসিক, ধর্মীয় কেন্দ্রিক স্থাপত্য কর্ম নির্মিত হয়েছে। রাজধানী ঢাকা থেকে ৩০ কি.মি. দক্ষিণ পূর্বে পানাম নগরের অবস্থান। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে ধনাঢ্য হিন্দু বণিকদের দ্বারা পানাম নগরের গোড়া পত্তন ঘটে। পূর্ব দক্ষিণে বিস্তত প্রায় ৬০০ মিটার দীর্ঘ ও ৫ মিটার প্রশস্ত একটি সড়কের দুইপাশে সুরম্য মোট ৫২ টি ভবন নিয়ে পানাম নগর। ভবনগুলির অধিকাংশ আয়তাকার এবং উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃত। উচ্চতা একতলা থেকে তিনতলা। স্থাপত্যশৈলীতে ইউরোপীয় শিল্পরীতির সাথে মুঘল শিল্পরীতির মিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া নির্মাণ শৈলীতে স্থানীয় কারিগরদের শিল্প কুশলতার প্রয়োগ ও ঘটেছে। বিভিন্ন পরিমাপের ইটের সঙ্গে চুন সুরকীর আস্তর দিয়ে নির্মিত ভবনসমূহে ব্যবহৃত হয়েছে মোজাইক, রঙিন কাঁচ, চিনিটিকরী, ছাদে কাঠের বীমবর্গা। চমৎকার স্টাকো অলংকরণে সমৃদ্ধ ভবনসমূহের দুইপাশে পরিবেষ্টিত পরিখা, ঘাটসহ পুকুর ও অনেকগু-ে কূপ রয়েছে।

 

ভবনসমূহের মধ্যে প্রাপ্ত লিপি অনুযায়ী কাশীনাথ ভবন (১৩০৫ বঙ্গাব্দে নির্মিত), নীহারিকা ভবন এর নামকরণ পাওয়া যায়। পানাম নগরীর পাশ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে বড় সদারবাড়ি, ছোট সর্দারবাড়ি, পানামসেতু, গোয়ালদী মসজিদ, মঠ, পোদ্দারবাড়ি টাকশাল, গিয়াস উদ্দিন আজম শাহের সমাধি উল্লেখযোগ্য" এই ছিল ভেতরের গোরের কথা। আমরা ২২ নং ভবনের সামনে আবারো কয়েকটা গ্রুপ ছবি নিলাম। ফোনের রেজুলেশন বাড়িয়ে দিলেও আকাশের উজ্জ্বলতা না থাকায় ছবিতে ঘোলাটে ঘোলাটে মনে হয়। গতকালও প্রকৃতির আবহাওয়া জ্বলজ্বল করছিল।

 

আজ সকাল থেকেই আকাশে ঘন কুয়াশায় সূর্যের আলোকে নিস্তেজ করে রেখেছে। প্রকৃতির এমন উদাসীনতা আমাকে খুব বেশি বিরক্তির মধ্যে ফেলে দেয়নি কারণ শীতের হিম শীতল বাতাস না থাকায় সকলকে নিয়ে গেছে এক প্রফুল্লতার চাদরে। তিনজন,চারজন মিলেমিশে একগুচ্ছ ফুলের বাসনের মত মিষ্টি কথার মৌ মৌ গন্ধ ছড়াচ্ছে চারপাশে। অনুভূত হয়, কিন্তু কেউ কারোর মুখপানে তাকানোর সময় নেই। অস্থায়ী একটা সম্পর্ক এত দ্রুত ঘনিষ্ঠের দিকে ধাবিত হবে, যাহা কল্পনার বহির্ভূত। এদিকে সহপাঠী রাসেল ভাই,জাকিরুল ভাই, লিখন দাস ও আমি সহ সিগারেট টানার ঘোর একটা নেশায় ভবনগুলোর আশেপাশে চিপা জায়গা খুঁজছি। অবশেষে লেইকের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা হুক্কা টানার মত তিনজনে তিনটা বেনসন টেনে শেষ করে আবার স্যারদের গ্রুপে যোগ দেই। আমরা তামিম ভাই,জাহাঙ্গীর ভাই,বেলাল ভাইদের সাথে জীবনের খুটিনাটি বিষয়ে আলাপ আলোচনা করতে করতে একপর্যায়ে ভবনগুলোর শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেলাম, সেখানে দেখা গেলো রাস্তার উপর লোহার গেইট দিয়ে ভবনগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছেন। নিরাপত্তার দিক থেকেও যথেষ্ট সাপোর্ট দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। একশ গজ পরপর আনসার বাহিনী রয়েছে।

 

আমরা আবারো চায়ের কাপে চুমুক দিলাম। বৃদ্ধ একজন চাচা চা,পান,সিগারেট বিক্রি করছেন দেধার্ছে।
একটাবিষয় যথেষ্ট কৌতূহল মনে হলো, গেইটের একপাশে দোকানদার ও আরেক পাশে ক্রেতা বা পর্যটকদের ভীর। চা শেষ করে আবার হাঁটা শুরু করলাম, হাঁটতে হাঁটতে কাশিনাথ ভবনের সামনে এসে ছবি পাগল রিয়াদ ভাই ও তামিম ভাই সিঙ্গেল কিছু পোজ দিলেন। এভাবে আমরা হাঁটতে হাঁটতে একপর্যায়ে সবাই বেরিয়ে এসে হস্তশিল্পের বাজারে প্রবেশ করে এটা-সেটা কেনা হলো, আমিই বা বাকি থাকবো কেন? আমার বৌয়ের জন্য আমিও কিনলাম খোঁপায় গুঁজে রাখা বাঁশের কাঠি। তারপর আবার সোজা বাসের সীটে বসে গেলাম। ক্লান্ত শ্রান্ত নিথর শরীরটা বাসের সীটে এলিয়ে দিয়ে স্বস্তি পেলাম।

 

চাকুরির সুবাদে হয়তো কখনোই এভাবে হাঁটাচলা করা হয়না। আজ একটু শরীরটার ওপর ধকলটা বেশি পড়েছে মনে হচ্ছে। বাস আবার যাত্রা শুরু করলো জয়নাল আবেদিন যাদুঘরের দিকে। দুই কিলোমিটার যেতেই পৌঁছে গেলাম। আমাদের শিক্ষক কামরুল স্যার ইউনিভার্সিটির পাস নিয়ে যাদুঘরের ভেতরে প্রবেশ করে সকল শিক্ষার্থীদের হাফ পাসের অনুমোদন নিয়ে সবাইকে ভেতরে প্রবেশ করানো হলো। আমরা সকলে ভেতরে প্রবেশ করেই মনে হলো যেন কূয়োর ব্যঙ সাগরে নিমজ্জিত হয়েছে। সবাই দ্বিকবিদিক ঘুরছে আর ছবি তুলছে। মূল ফটক ছাড়াতেই প্রথমে চোখে পড়লো গরুরগাড়ির ভাস্কর্য।

 

সেখানে গ্রুপ ছবি নিয়ে সবাই এগিয়ে গেলো যাদুঘরের দিকে। ভেতরে রয়েছে নানা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ব্রিটিশদের ব্যবহৃত নানা রকম হস্তশিল্পের আসবাবপত্র ও দেয়ালে টাঙানো জয়নাল আবেদিনের হাতে আঁকা অসংখ্য ছবি ও গ্রামীণ চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। সিঁড়ির পাশে দেয়ালে বৃহদাকারে টাঙানো আছে নকশিকাঁথা, এককথায় মনোমুগ্ধকর একটা নান্দনিক দৃশ্য। আমরা রীতিমতো প্রথম তলা, দ্বিতীয় তলা,তৃতীয় তলা পরিদর্শণ করে বেরিয়ে এসে সোজা লেইকের পদ্মফুল দেখার এক অমোঘ নেশায় চলে গেলাম উত্তরের দিকে। সেখানে রয়েছে নানা রকম নাগরদোলা, আরও রয়েছে বাঁশ ও কাঠের তৈরি নানা রঙের শো- পিচ এর দোকান। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে একপর্যায়ে সময় ঘনিয়ে আসে। পশ্চিম আকাশে সূর্যটা রক্তিম পুষ্পাঞ্জলি ছড়িয়ে দেয়, পল্লী কবি জসিমউদদীনের অমর কবিতা কবর কবিতার শেষ দুই চরণের ধ্বনি প্রকৃতির খেয়ালে আপনা আপনিই হৃদয়ের কার্ণিশে বেজে ওঠে ----
" ওই দূর বনে সন্ধ্যা নামিছে ঘন আবিরের রাগে
ওমনি করিয়া লুটাইয়া পড়িতে বড় সাধ আজ জাগে "
বেলা শেষে পুরো টিম একত্রে বসে দূর্বাঘাসের উপর মাদুর বিছিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে ক্যাম্পাসে ফেরার জন্য বাসের হউসেল বেজে উঠলো। এযেন আরেক আনন্দঘন মুহুর্তে বেদনার করুণ সুর বেজে উঠলো, আনমনে বলতে ইচ্ছে করছে যেতে নাহি দেবো হায়, তবুও যেতে দিতে হয়।

 

একেকজন শিক্ষার্থী বকুলের ফুল হয়ে একই সুতোয় গেঁথে মাল্য হয়ে সুবাস ছড়িয়েছিলো লোক ও কারুশিল্প জয়নাল আবেদিন যাদুঘরের আঙ্গিনায়। বাস্তবতার এক তান্ডবলিলা কিছুক্ষণের মধ্যেই যেন ছিন্নভিন্ন করে দিবে। দিবেইতো কেউ তো কারোর রক্তের সম্পর্কে আটকানো নয়, অল্প কিছু সময়ের ব্যবধানে সমুদ্রের সফেনের মত ঢেউয়ের পীড়াপীড়িতে আছড়ে পড়েছিল তটিণী-র তীরে। ফাগুনের পলাশ,হিজল,তমাল,শিমুলের মতো নানা রঙের ছড়াছড়িতে রাঙিয়ে দিয়েছিলো পুরো প্রকৃতি জুড়ে।

 

আবার যেন গ্রীষ্মের ভর দুপুরে সকলের আনন্দ অনূভুতি রোদে শুকিয়ে মিলিয়ে গেলো বসন্তের মহা উৎসব। মিলিয়ে গেছে তাতে কি, আবার যেন ফিরে আসে ঝড়ে যাওয়া বৃক্ষের পাতার মত নতুন পল্লব নিয়ে সকলের মাঝে। সময় হয়তো ফুরিয়ে গেছে, আনন্দ হয়তো মিলিয়ে গেছে, স্বপ্ন আর অনূভুতি কখনই ম্লান হয়না, নতুন কুঁড়ির মত শুভাগমনের প্রত্যশায় যাত্রাবাড়ির মহা ব্যাস্ত সড়কের আইল্যান্ডের সাথে গা ঘেঁষে সহস্র যানবাহন পেছনে ফেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লগো বিশিষ্ট দূরপাল্লার বাস শোঁ-শোঁ করে ক্যাম্পাসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ভাবতে ভাবতে মনের অজান্তেই ফিরলাম প্রিয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। এই ভ্রমনটি স্মৃতি হয়ে থাকবে আজীবন।

লেখক-শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।


আরও খবর



সম্পদের সুরক্ষায় সর্বাত্মক লড়াই করা জায়েজ

প্রকাশিত:বুধবার ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ জানুয়ারী ২০২৫ | ৫৭জন দেখেছেন

Image

ধর্ম ডেস্ক:  ইসলাম ইহকাল ও পরকালের মধ্যে ভারসাম্য সৃষ্টি করেছে। একজন মুমিন শুধু পরকাল নিয়ে পড়ে থাকবে—ইসলাম এটা চায় না। ইসলাম চায় প্রয়োজন অনুসারে ইহকাল ধারণ করে মানুষ পরকালমুখী হোক। ইসলাম কখনো দুনিয়াদারি বাদ দিয়ে শুধু ধর্মকর্ম করার নির্দেশ দেয় না।


সমাজে দুর্বল হয়ে কোনো মুসলমান বসবাস করবে—এটা ইসলাম পছন্দ করে না। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘দুর্বল মুমিনের চেয়ে সবল মুমিন শ্রেষ্ঠ এবং আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়। তবে প্রত্যেকের মধ্যেই কল্যাণ আছে...।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৬৪)


তাই দুনিয়ায় এমনভাবে চলা যাবে না যে জালিম ও প্রভাবশালীরা তার সম্পদ নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে।


এ জন্য নিজের অর্জিত সম্পদের সুরক্ষার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল! যদি কেউ আমার সম্পদ ছিনিয়ে নিতে উদ্যত হয় তাহলে আমি কী করব? রাসুল (সা.) বলেন, তুমি তাকে তোমার সম্পদ নিতে দেবে না। লোকটি বলল, যদি সে আমার সঙ্গে এ নিয়ে মারামারি করে? রাসুল (সা.) বলেন, তুমি তার সঙ্গে মারামারি করবে। লোকটি বলল, আপনি কী বলেন! যদি সে আমাকে হত্যা করে? রাসুল (সা.) বলেন, তাহলে তুমি শহীদ হিসেবে গণ্য হবে।


লোকটি বলল, আপনি মনে করেন, যদি আমি তাকে হত্যা করি? রাসুল (সা.) বলেন, সে জাহান্নামি। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৭)


শহীদ তিন ধরনের—


(১) ওই ব্যক্তি, যে ইসলামের জন্য কাফিরের সঙ্গে জিহাদ করে মারা যাবে। সে দুনিয়া ও আখিরাতে শহীদ হিসেবে বিবেচিত হবে। দুনিয়ায় তাকে গোসল ও জানাজা দিতে হবে না। আর আখিরাতে সে শহীদের মর্যাদা পাবে।


(২) ওই ব্যক্তি, যে আখিরাতে সওয়াবের দিক দিয়ে শহীদ হবে। কিন্তু সে দুনিয়ার নির্দেশাবলিতে শহীদ হবে না। যেমন—মহামারি বা পেটের অসুখে অথবা বাড়ি ধসে কিংবা নিজের সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেলে। এমন ব্যক্তিকে গোসল দিতে হবে এবং সালাতে জানাজাও পড়তে হবে। তবে এরা আখিরাতে শহীদের সওয়াব পাবে। তবে এটা জরুরি নয় যে এমন ব্যক্তি প্রথম প্রকারের শহীদদের সমতুল্য হবে।


(৩) ওই ব্যক্তি, যাকে দুনিয়ার নির্দেশাবলির দিক দিয়ে শহীদ বলা হবে। তবে পরকালে শহীদের পুরোপুরি সওয়াব পাবে না। যেমন—যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করেছে, কিন্তু গনিমতের সম্পদের ক্ষেত্রে খিয়ানত করেছে। এ ধরনের লোক কাফিরদের সঙ্গে যুদ্ধ করার কারণে তাকে গোসল দিতে হবে না। জানাজার সালাত আদায় করবে না। কিন্তু আখিরাতে সে শহীদের পূর্ণ সওয়াব পাবে না। (শরহে নববী)


এভাবেই ইসলাম মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে এবং প্রত্যেককে নিজ নিজ সম্পদ রক্ষায় সদা তৎপর থাকার নির্দেশ দিয়েছে।



আরও খবর

ডালিমসহ জান্নাতে পাওয়া যাবে যেসব ফল

শনিবার ১১ জানুয়ারী ২০২৫

ভূমিকম্প নিয়ে কোরআন-হাদিসে কী বলা হয়েছে?

বৃহস্পতিবার ০৯ জানুয়ারী ২০২৫




সব ডিভাইসে একই ধরনের চার্জার ব্যবহার বাধ্যতামূলক

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ জানুয়ারী ২০২৫ | ৪৫জন দেখেছেন

Image

অনলাইন ডেস্ক: নতুন সব স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং ক্যামেরায় একই ধরনের চার্জার ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সম্প্রতি কার্যকর করা নতুন নিয়মে এটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শনিবার ইউরোপীয় কমিশনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।


এতে বলা হয়, আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউতে ‘ইউএসবি-সি’ টাইপকে ইলেকট্রনিক ডিভাইস চার্জ করার জন্য কমন স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়েছে। সব ধরনের নতুন ফোন, ট্যাবলেট এবং ক্যামেরার জন্য একই চার্জারসহ থাকবে দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তি। এর ফলে ই-বর্জ্য কমবে বলে আশা করছেন তারা।


এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর শুধু ইউরোপেই নষ্ট ও ফেলে দেওয়া চার্জিং কেবল থেকে ১১ হাজার টন ই-বর্জ্য তৈরি হয়। এর আগে ২০২১ সালের দিকে সব ডিভাইসের জন্য একই প্রযুক্তিগত মান নিশ্চিত করতে নতুন আইনের প্রস্তাব করে ইউরোপিয়ার কমিশন। তাই এই বর্জ্য হ্রাস করার লক্ষ্যে সব স্মার্টফোন এবং ছোট ইলেকট্রনিক ডিভাইসের জন্য সর্বজনীন চার্জিং প্রযুক্তির প্রস্তাব করে তারা।


ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানায়, একই ধরনের চার্জার ব্যবহার করার ফলে ইউরোপিয়ানদের জীবন সহজ হবে এবং ভোক্তাদের খরচও কমবে। এ ছাড়া তারা আশ্বস্ত করছেন, পুরনো চার্জার ব্যবহারের ফলে অব্যবহৃত চার্জারের সংখ্যা কমে যাবে।


তবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে অ্যাপল জানায়, এই প্রস্তাবের ফলে উদ্ভাবনী প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মূলত প্রতিষ্ঠানটির তৈরি আইফোনগুলোতে তাদের নিজস্ব ‘লাইটনিং কানেক্টর’ ব্যবহৃত করা হয়ে থাকে।


আরও খবর



মেলান্দহে কল্যাণরাষ্ট্র শীর্ষক আলোচনা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০২ জানুয়ারী 2০২5 | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ জানুয়ারী ২০২৫ | ৩৭জন দেখেছেন

Image

জামালপুর সংবাদদাতা: জামালপুরের মেলান্দহে কল্যাণরাষ্ট্র বিষয়ক মুক্ত আড্ডা শীর্ষক আলোচনা সভা ২ জানুয়ারি দুপুরে উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়। সমাজসেবা দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদপ্তর এর আয়োজন করে।

ইউএনও এস.এম. আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সৈয়দ হারুন অর রশিদ, ৭১’র গেরিলা আবুল হোসেন, স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলাম, সমাজসেবা অফিসার আরিফুল ইসলাম, এম.এ.রশীদ এতিম খানা ও প্রবিন নিবাশের সুপার আলহাজ আবু বকর সিদ্দিক, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি-ইত্তেফাক সংবাদদাতা শাহ জামাল, দোস্ত এইড বাংলাদেশের ফিল্ড সুপার ভাইজার আবুজর পরাগ চৌধুরী প্রমুখ। সভায় বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক শিক্ষক ও সূধিমহলসহ অন্যান্য পেশাজীবির লোকজন উপস্থিত ছিলেন। 



আরও খবর



১০ জেলার ওপর দিয়ে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ

প্রকাশিত:শনিবার ১১ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২৮জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের ১০টি জেলার ওপর দিয়ে যে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বইছে সেটি আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকবে।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) রাতে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আর এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

একই সঙ্গে আগামী ৭২ ঘণ্টায় (৩ দিন) অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

এ ছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মৌলভীবাজার ও গোপালগঞ্জ জেলাসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু এলাকায় অব্যাহত থাকতে পারে। তবে এই সময়ের মধ্যে সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিম অঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্য জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে বলেও জানানো হয়েছে।


আরও খবর