নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের বালিকান্দি গ্রামের বাবুল মিয়া ইউটিউব দেখে হলুদ তরমুজ চাষের শখ জাগে।পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথমবারের মতো উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে হলুদ তরমুজ চাষ করেই সফল হয়েছেন তিনি।
জানা যায়, ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে হলুদ তরমুজের চাষ শুরু করেন। প্রথমবারের চাষেই ভালো ফলন হয়েছে। এখন তার হলুদ তরমুজ দেখতে আশে পাশের এলাকা থেকে মানুষ তার ক্ষেতে ছুটে আসছেন। অনেকেই আগামিতে এই তরমুজ চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করে বাবুল মিয়ার মাধ্যমে উপজেলা কৃষি অফিসের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। নতুন এই প্রজাতির তরমুজ দেখতে সুন্দর, আবার স্বাদ ও সুগন্ধিও বেশ। একারণে এই তরমুজের চাহিদাও ভাল।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের বালিকান্দি গ্রামের বাবুল মিয়া ৫০ শতাংশ জমিতে তরমুজের চাষ করেছে। তার মধ্যে এই ৫০ শতাংশ জমিতে হলুদ তরমুজের চাষ হয়েছে।
তরমুজ চাষকারী বাবুল মিয়া বলেন, ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে এই হলুদ তরমুজের চাষ শুরু করি। ইউটিউবে এই তরমুজের ফলন দেখে খুব শখ জাগলো। তাই চিন্তা করলাম একবার পরীক্ষা করেই দেখি। এরপর সাহস করে উপজেলা কৃষি অফিসের সরনাপর্ণ হই এবং উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ সংগ্রহ করি। ৫০ শতাংশ জায়গায় বীজ বপন করি। ফলনও ভালো হয়েছে।
ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৬০০টির মতো হলুদ তরমুজ এসেছে। যার গড় ওজন প্রায় ১৫শত কেজি। তিনি বলেন, এই ফসল চাষ করতে সব মিলিয়ে ব্যয় হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো। ফল থেকে আয় হবে প্রায় ২ লক্ষ টাকার মতো। এটি শীত মৌসুমের ফসল। মাত্র ৪৫ দিনেই এর ফলন পাওয়া যায়। আটপাড়া উপজেলার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এখানে এর ভালো ফলন হচ্ছে। এই তরমুজ চাষে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ারও সুযোগ আছে।
তিনি আরও বলেন, যারা বেকার রয়েছেন তারা এই ফল চাষ করে তাদের বেকারত্ব দূর করতে পারেন। মাত্র ৪৫ দিন সময় সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে ৫০ শতাংশ জমিতে ২ লাখ টাকার মতো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমি এই ফল চাষ করি আমার পারিবারিক চাহিদার জন্য। ফলন হবার পর এর চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। যার জন্য অনেককেই ফলটি দেওয়া যায়নি। তবে তিনি আগামীতে এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন।
আটপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, হলুদ তরমুজ উচ্চমূল্যের ফসল। এটি হাইব্রিড জাতীয়। উৎপাদন ব্যবস্থা দেশি তরমুজের মত। হলুদ তরমুজে পুষ্টি উপাদান বেশি। এটির ভিতরটা কম্প্রেসড বা ঠাসা থাকে। এটিতে ভিটামিন এ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ফলটি অনেক মিষ্টি। আটপাড়ার মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় ফলটি চাষের সম্ভাবনা অনেক। আগামীতে হলুদ তরমুজ চাষ সম্প্রসারণে আরো বেশি কাজ করবে।
নেত্রকোণা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শাহজাহান সিরাজ বলেন, হলুদ জাতীয় তরমুজ নেত্রকোণায় এই প্রথম হয়েছে। ফলটি ভিন্ন কালারের হওয়ায় দেখতে আকর্ষণ করে। স্বাদে খুবই মিষ্টি। দেখলেই খেতে ইচ্ছে করে। উচ্চফলনশীল এ হলুদ তরমুজে ভিটামিন এ ও সি রয়েছে।