
সোহেল খান দূর্জয় : যাদের হাত ধরে এদেশে স্বাধীনতা এসেছে তাদেরই একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা জজ মিয়া খান। শহরে থেকেও যেন তিনি ভাটি অঞ্চলে বসবাস করছেন।যেখানে অগ্রহায়ণ মাসের ফসল উৎপাদন করে ঘরে তোলা হচ্ছে। সফলী জমি গুলো সরিষা চাষ করার উপযোগী হয়ে খড়খড়া হয়ে গেছে, সেই সময় নেত্রকোনা বারহাট্টা উপজেলা আসমা ইউনিয়নের আসমা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জজ মিয়া খানের বাড়িতে যেতে নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে।
হেমন্তকাল বেদ করে শীত কাল এসে গেছে, এখনও জজ মিয়ার বাড়ির সামনে পানি থইথই করছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জজ মিয়া খানের বড় সন্তান নূরুল আমিন খান সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগ এর সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা এই বছরের বন্যার পর থেকে খুব কষ্টে আছি। অল্প জায়গার জন্য একটি রাস্তা করতে পারছি না। এক সাইটের জমি আমার আপন খালু শাহজাহান খান এর , আরেক সাইটের জমি আমার চাচা জানু মিয়ার । আমার ভাই পুলিশে চাকরি করে। সে রাস্তার জন্য বর্তমান বাজার মূল্য থেকে এই জমির দাম বেশি দিতে চেয়েছে। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হচ্ছে না। এখন এই নৌকাটিই আমাদের প্রধান বাহন। এটি ছাড়া এক মুহূর্ত চলতে পারি না। আমার বাবা কয়েকদিন যাবৎ খুব অসুস্থ,ঘর থেকে ধরে ধরে বের করতে হয়।
এই ব্যপারে কোন অভিযোগ হয়েছে কি-না জানতে চাইলে নূরুল আমিন খান বলেন গত মাস দুয়েক আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোন ফল হয়নি।
স্হানীয় সূত্রে জানা যায় জজ মিয়া খানের বাড়িতে যেতে সামনে যে জমিটুকু আছে সেই জমির মালিক তার আত্মীয়। জজ মিয়া সরলসোজা মানুষ। অন্য কোন মুক্তিযোদ্ধা হলে এত দিনে রাস্তা হয়ে যেত।
জমির মালিক শাহজাহান খান বলেন, এই জমির পশ্চিম পাশে একটি রাস্তা রয়েছে। ইচ্ছে করলে ঐ রাস্তা দিয়ে তারা যাতায়াত করতে পারে। আমার দুই ছেলে। এই জায়গা টি বাসা করার জন্য কিনেছি। রাস্তার জন্য কিছু জমি বিক্রি করলে আমার জায়গা কমে যাবে।
আসমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম খান চন্দু বলেন, আমি রাস্তা দিতে চাই। কিন্তু রাস্তার দেওয়ার আগেই বাঁধা পড়লে তো তা সম্ভব হয়ে উঠে না। বিষয়টি আসলেই দুঃখ জনক আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করবো, যেন তাড়াতাড়ি এই রাস্তাটি হয়।
সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহ মোহাঃ আবদুল কাদের বলেন, বারহাট্টা শহরের পাশে মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জজ মিয়া খানের বাড়ি। এখানে সারাবছর পানি লেগে থাকে, সে অসুস্থ, তাকে দেখতে গেলে কাঁদা পানির উপর দিয়ে যেতে হয়। এটা আসলেই লজ্জা জনক। আমি চাই দ্রুত যেন এই মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি যাওয়ার রাস্তাটি হয়ে যায়।
বারহাট্টা উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জজ মিয়া খানের বাড়িতে যাওয়ার জন্য নিজস্ব কোন ভূমি না থাকায় রাস্তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। জমির মালিক পক্ষ টাকা দিয়েও জমি বিক্রয় করতে রাজি না হওয়ায় রাস্তাটি হচ্ছে না। এর পরও চেষ্টা করবো যেন রাস্তাটি করা যায়।